শরীয়তপুর সংবাদদাতা : শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ভাঙনে বাপ-দাদার ভিটেমাটি হারিয়ে কেদারপুর লস্করবাড়ি ও মৌলভীর বাগানে আশ্রয় নেয় শত শত পরিবার। কাজকর্ম না থাকায় অনাহারে-অর্ধহারে আশ্রয়হীন মানুষগুলো শীতের মাঝে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা জানেন না ভবিষ্যতে ছেলেমেয়ে নিয়ে কোথায় তাদের ঠাঁই হবে। সরকারি-বেসরকারি কোনো সাহায্য-সহযোগিতা তারা পাননি। প্রশাসন বলছে নদীভাঙা সহায়-সম্বলহীনদের জন্য সরকারি খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

নদীভাঙন এলাকার আশ্রয়হীন সুলতান খান জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চরজুজিরা, সাধুর বাজার, ওয়াপদা, চণ্ডিপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে শত শত পরিবারের হাজার হাজার একর জমি ও ঘরবাড়ি পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ওইসব নদীভাঙন এলাকার হাজার হাজার মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন। কোথাও কোনো মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে কেউবা রাস্তার পাশে, কেউবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন।

নদীভাঙা সহায়-সম্বলহীন আ. খালেক বলেন, আমাদের আগের বাড়ি ছিল পদ্মার পাড়ে চরজুজিরা গ্রামে। নদীভাঙনে জমিজমা, বাড়িঘর সবকিছু নিয়ে গেছে। আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। তাই লস্করদের কাঠের বাগানে আশ্রয় নিয়েছি।

আশ্রয়হীন নাছিমা বেগম বলেন, ৬ মাস যাবৎ আমরা বাড়িঘর হারিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। কেউ আমাদের সাহায্য করেনি।

মুলাই ছৈয়াল বলেন, আমি আগে জেলের কাজ করতাম। বর্তমানে আমাদের এলাকায় কোনো কাজকর্ম না থাকায় ছেলেমেয়ে নিয়ে অনাহারে-অর্ধহারে আছি।

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম দ্য রিপোর্টকে বলেন, নদীভাঙন এলাকার মানুষের গত বর্ষায় ১০ কেজি করে চাল দিয়েছি। সরকারি বরাদ্দের কিছু শীতের কম্বল দিয়েছি। তাদের পুনর্বাসনের জন্য জমি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে খাসজমির বেশির ভাগই হচ্ছে পদ্মা নদীর মাঝখানে চরআত্রা ও নওয়াপাড়া এলাকায়। ওইসব এলাকায় মানুষ যেতে চায় না। তবে কেউ যদি যেতে চায়, আমরা খাসজমি দিতে পারি।

(দ্য রিপোর্ট/এএইচ/এএস/জানুয়ারি ১৫, ২০১৪)