রাজশাহী সংবাদদাতা : রাজশাহীর চারঘাটে নাশকতার শিকার নন্দনগাছি কালাবিপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন ৪ জানুয়ারি গভীর রাতে ওই বিদ্যালয়টিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে বিদ্যালয়টির চারটি শ্রেণিকক্ষ আসবাবপত্রসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে খোলা আকাশের নিচে চলছে ওই চারটি শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নির্বাচনের আগের দিন ৪ জানুয়ারি মধ্যরাতে চারঘাটের নন্দনগাছি কালাবীপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ভোটকেন্দ্র ভেবে নির্বাচন বিরোধীরা ওই বিদ্যালয়টিতে আগুন দেয়। ওই বিদ্যালয়টির পাশের কালাবীপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

কক্ষ চারটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম শ্রেণী এবং বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিলো। আগুনে ওই চারটি কক্ষ আসবাবপত্রসহ প্রায় সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এ ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়টি মেরামত না করায় পাঠদান অব্যাহত রাখতে বিদ্যালয়ের সামনের খোলা মাঠেই ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষককরা। নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই এমন বিড়ম্বনার শিকার বিদ্যালয়টির আড়াইশ শিক্ষার্থী।

এ ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না কোমলমতি এ সব শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামী আক্তার ও ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী অনামিকা জানায়, নতুন ক্লাসে ওঠার মজাটাই দুর্বৃত্তরা নষ্ট করে দিয়েছে। নতুন বছরের শুরুতে তাদের খোলা আকাশের নিচে এভাবে ক্লাস করতে হবে তারা কখনোই ভাবেনি। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেছে তারা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভোটকেন্দ্র হলেও এ বিদ্যালয়টি ভোটকেন্দ্র ছিল না। তবে দুর্বৃত্তরা ভোটকেন্দ্র ভেবে তাতে আগুন দেয়। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ায় পাঠদান অব্যাহত রাখতে বিদ্যালেয় কমন রুমে এবং ফাঁকা মাঠে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। তবে কমন রুম না থাকায় প্রায় দেড়শ ছাত্রী পড়েছে চরম বিড়ম্বনায়। বিদ্যালয়টি দ্রুত মেরামতের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।’

তিনি আর বলেন, ‘ঘটনার পর জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যালয়টি মেরামতের বিষয়ে তারা আশ্বাস দিয়েছেন।’

চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফুন্নেসা বলেন, ‘বিদ্যালয়টি পরিদর্শন শেষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে বিদ্যালয়টির দ্রুত মেরামত করা হবে।’

এ ছাড়া একই দিনই ওই এলাকার আর্র কয়েকটি বিদ্যালয়েও আগুন দেওয়ার চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। তবে এ সব ঘটনায় তেমন কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি বলেও জানান তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচজে/এনডিএস/জানুয়ারি ১৫, ২০১৪)