দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ৫ জানুয়ারি একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, জনগণ থেকে বিছিন্ন হয়ে তারাই সব কূল হারিয়েছে। আমরা কোনো কূল হারায়নি।

‘নির্বাচনে না গিয়ে খালেদা জিয়া একূল-ওকূল দুকূলই হারিয়েছেন’- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি এ উত্তর দেন।

গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে ১৮ দল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন। জনগণের কাছে নির্বাচনোত্তর বিএনপি ও ১৮ দলের অবস্থান তুলে ধরে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। আমরা চাই না দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের কেউ হস্তক্ষেপ করুক। স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলতে চাই।

তিনি বলেন, ২০ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৮ দলের পক্ষ থেকে গণসমাবেশ করা হবে। ওই সমাবেশ থেকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচর বর্জন করায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানানো হবে।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে ১৮ দলীয় জোট নেতা বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে জোট করে আওয়ামী লীগই আন্দোলন করেছিল। ১৯৮৬ সালে আমরা চুক্তিবদ্ধ ছিলাম, স্বৈরাচারের অধীনে কোনো দল নির্বাচনে যাবে না। যারা যাবে তারা জনগণের কাছে বেঈমান হিসেবে চিহ্নিত হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে সেই নির্বাচনে গিয়েছিল। এরপর ১৯৮৮ সালেও প্রথমে নির্বাচনে গিয়ে পরে ভুল বুঝতে পেরে নির্বাচন বর্জন করেছিল তারা।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজ যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা উঠেছে, এ জন্য কে আন্দোলন করেছিল? আওয়ামী লীগ জামায়াতকে সঙ্গে নিয়েই তত্ত্বাবধায়কের জন্য আন্দোলন করেছিল। তাদের সঙ্গে ছিল জাতীয় পার্টি্। এরা তো সব সমেয়ই জোটবদ্ধ ছিল।’

সাম্প্রতিক সময়ে আন্দোলন-সহিংসতার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন সব সময় শান্তিপূর্ণ। আমরা কোনো সহিংস আন্দোলন করি না। আমাদের আন্দোলনের মাধ্যমে সারা দেশে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যেখানে গিয়েছি সেখানেই জনগণ ব্যাপক সাড়া দিয়েছে। আপনারা (সাংবাদিকরা) আমাদের সঙ্গে ছিলেন। কি আপনারা দেখেননি?’

সংবাদ সম্মেলনে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা অংশনেন।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গণি, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, বেগম সারোয়ারী রহমান, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, অধ্যাপক এম মান্নান, এম আব্দুল মান্নান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ফজলুর রহমান পটল, ব্যারিস্টার হায়দার আলী, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদীন ফারুক প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

১৮ দলীয় জোটে নেতৃবৃন্দের মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য ড. রেদোয়ান উল্লাহ শাহিদী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান শফিউল আলম প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামী, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল মোবিন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, খেলাফত মজলিশের সভাপতি মাওলানা ইসহাক, মুসলিম লীগের সভাপতি এইচ এম কামরুজ্জামান, জমিয়তে ওলামে ইসলামের সহ-সভাপতি মাওলানা জহিরুল হক ভূইয়া, এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তুজা, এনডিপির সভাপতি শেখ শওকত হোসেন নীলু, ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানি, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ারুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, ২১ অক্টোবর হোটেল ওয়েস্টিনে খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করেন। এ ছাড়া ২৪ ডিসেম্বর গুলশানে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুর আগে ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচন দাবি করে একটি প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হয়।

(দ্য রির্পোট/টিএস-এমএইচ/এমএআর/আরকে/জানুয়ারি ১৫, ২০১৪)