আ.লীগ নেতা হত্যা : আটক ৬, অস্ত্র বোমা উদ্ধার
যশোর সংবাদদাতা : জেলায় আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম (৫২) হত্যার ঘটনায় পুলিশ ছয়জনকে আটক করেছে। এ সময় একটি শুটারগান, এক রাউন্ড গুলি, তিনটি তাজা বোমা ও আধাকেজি গান পাউডারসহ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নজরুল ইসলামকে হত্যার প্রতিবাদে বুধবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ ও সমাবেশ করেছেন ব্যবসায়ীসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী যশোর পুরাতন টায়ার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম মিন্টু জানান, মঙ্গলবার রাতে নজরুল ইসলাম যশোরের ঢাকা রোড তালতলা এলাকায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করছিলেন। এ সময় সন্ত্রাসী ফিঙে লিটন বাহিনীর ক্যাডাররা নজরুল ইসলামকে লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলি ও দুটি বোমা ছুড়ে মারে। পরে দোকানের ভিতর ঢুকে তাকে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সকালে তিনি মারা যান।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদার বলেন, ভারতে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী ফিঙে লিটন বাহিনীর সদস্যরা এ হামলা চালায়।
এদিকে, হত্যার প্রতিবাদে বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত যশোর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা। এ সময় সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকে। জেলা আওয়ামী লীগ ও পুরাতন টায়ার ব্যবসায়ী সমিতির নেতাকর্মীরা শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে যশোর-খুলনা মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দুই ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখে।
অবরোধ শেষে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যশোর পুরাতন টায়ার ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি কাওসার আহমেদ। এ সময় বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম মিন্টু, রণজিৎ কুমার পাল, নজরুল ইসলাম, আব্দুর রউফ, মোহাম্মদ সেলিম প্রমুখ।
কোতোয়ালি থানা পুলিশ সকালে অভিযান চালিয়ে হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে সন্ত্রাসী ফিঙে লিটনের সহযোগী ও ভায়রা সেলিম পালশসহ ছয়জনকে আটক করেছে। অন্যরা হলেন- শহরের মোল্লাপাড়ার বাঁশতলা এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে মেহেদি হাসান শান্ত, রবিউল আলমের ছেলে হৃদয়, ইউসুফ আলীর ছেলে সুমন, মৃত সিরাজ মিয়ার ওরফে সিরার ছেলে রনি এবং খালদার রোড এলাকার জাকির হোসেন ওরফে জেকের ছেলে সাজ্জাদ।
রনির কাছ থেকে একটি ওয়ান শুটারগান ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া ফিঙে লিটনের বোনজামাই নান্নুর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তিনটি বোমা ও আধাকেজি গান পাউডারসহ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ জানান, এটি কোন রাজনৈতি হত্যাকাণ্ড নয়। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এখনও মামলা হয়নি। তবে পুলিশ হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে আটক করেছে। অন্যদের সনাক্ত করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
(দিরিপোর্ট২৪/জেএম/এমএআর/অক্টোবর ৩০, ২০১৩)