দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে সাত সংসদীয় আসনে পুনঃভোট চলছে। তেমন কোন গোলযোগ ছাড়াই বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সাত আসনের মধ্যে বগুড়া-৭ আসনে (গাবতলী) নির্বাচনী এলাকায় হরতাল পালন করছে নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জেপি, তরিকত ফেডারেশন ও স্বতন্ত্রসহ ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তবে কুড়িগ্রাম-৪ আসনের দুই কেন্দ্রে আদালতের নির্দেশের কারণে ভোট হচ্ছে না।

৫ জানুয়ারি বিএনপিসহ ১৮ দলের ভোট প্রতিহতের ঘোষণার মধ্যে হামলা ও নাশকতায় এ সব জেলার ৩৯২ কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করে ইসি।

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বুধবার বলেন, ভোটের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সেনা, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের সদস্যরা প্রতিটি উপজেলায় ৫-১০টি কেন্দ্র ঘিরে টহলে থাকবে। ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোটদানের পরিবেশ তৈরিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

৫ জানুয়ারি সহিংসতা, ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগের কারণে দিনাজপুর-৪, কুড়িগ্রাম-৪, বগুড়া-৭, গাইবান্ধা ১, ৩, ৪, যশোর-৫ ও লক্ষ্মীপুর-১ আসনের ৯৫৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৯২ কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়।

পুনঃভোটের তথ্য

দিনাজপুর-৪ আসনের ১২০টি কেন্দ্রের মধ্যে স্থগিত হয় ৫৭টি। স্থগিত কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯১৯। বাকি কেন্দ্রগুলোয় আওয়ামী লীগের আবুল হাসান মাহমুদ আলী ৬৮ হাজার ৮৮, ওয়ার্কার্স পার্টির এনামুল হক সরকার ১ হাজার ৩৮০ ভোট পান।

গাইবান্ধার তিনটি আসনে পুনঃভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনজুরুল ইসলাম লিটন ইতোমধ্যে ৬৮ হাজার ৯৯৩ ভোট ও জাতীয় পার্টির আব্দুল কাদের খান ৮ হাজার ৩৮৬ ভোট নিয়ে লড়বেন গাইবান্ধা-১ আসনে। এখানকার ১০৯টি কেন্দ্রের মধ্যে স্থগিত ৫৪ কেন্দ্রে ভোট রয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ২০৯টি। গাইবান্ধা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের ইউনুস আলী সরকার ৭০ হাজার ৬৬৪ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম খাদেমুল খুদি ১২ হাজার ৭৮১ ভোট পেয়েছেন ৫০টি কেন্দ্রে। স্থগিত ৮০টি কেন্দ্রে ভোট রয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার ৬২৭টি। গাইবান্ধা-৪ আসনের ১৩০টি কেন্দ্রের মধ্যে স্থগিত রয়েছে ৭২টি। এতে ভোট রয়েছে ২ লাখ ৭৭টি। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ৫৯ হাজার ৮৬২ ও আওয়ামী লীগের মনোয়ার হোসেন চৌধুরী ১৮ হাজার ৮০৬ ভোট নিয়ে লড়বেন। জাতীয় পার্টির মুহম্মদ আলতাফ আলী ৭ হাজার ৪৩ ভোট ও জেপির এটিএম আমিনুল ইসলাম ৩ হাজার ১৭৫ ভোট নিয়ে লড়বেন বগুড়া-৭ আসনে। এ আসনের ১৬১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৬টি কেন্দ্রে পুনঃভোট হচ্ছে। এতে ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৬৫ ভোট রয়েছে।

যশোর-৫ আসনের ১২২টি কেন্দ্রের মধ্যে ৬০টি কেন্দ্রে পুনঃভোট হচ্ছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৬ ভোট রয়েছে। আওয়ামী লীগের খান টিপু সুলতান ৩০ হাজার ৫৩১ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বপন ভট্টচার্য ১৮ হাজার ৩৩১ ভোট পেয়েছেন ইতোমধ্যে। তরিকত ফেডারেশনের এম এ আউয়াল নৌকা প্রতীক নিয়ে লক্ষ্মীপুর-১ আসনে লড়বেন। ইতোমধ্যে তিনি ৩২ হাজার ৫৭ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ২০ হাজার ৯১১ ভোট। এ আসনের ৮১টি কেন্দ্রের মধ্যে পুনঃভোটের ২১টি কেন্দ্রে ৫০ হাজার ২৭৯ ভোট রয়েছে।

আদালতের স্থগিতাদেশ

কুড়িগ্রাম-৪ আসনের ২টি কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার ভোট স্থগিতাদেশ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা ইসিতে এসেছে। এ ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার ওই দুই কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে না বলে ইসি কর্মকর্তারা জানান। আওয়ামী লীগ প্রার্থী এ আসনের আরও কিছু কেন্দ্রে পুনঃভোট চায়। পরবর্তী নির্দেশনা পেলে ওই কেন্দ্রে ভোট হবে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা। কুড়িগ্রাম-৪ আসনের ১০৬ কেন্দ্রের মধ্যে স্থগিত ২ কেন্দ্রে ভোট রয়েছে ৭ হাজার ২৫৭টি। জেপির রুহুল আমিন ৩০ হাজার ৫৪৪ ভোট ও আওয়ামী লীগের জাকির হোসেন ২৩ হাজার ৯৪৬ ভোট পান। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ৬ হাজার ৫৯৮ ভোটের পার্থক্য ঘোচাতে ভোট হচ্ছে ২ কেন্দ্রে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএস/এসবি/জেএম/শাহ/জানুয়ারি ১৬, ২০১৪)