দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : পার্বত্যাঞ্চলে পুরুষের তুলনায় পাহাড়ি নারীরা অনেক বেশি কর্মঠ ও পরিশ্রমী। জুম, ক্ষেতখামার থেকে শুরু করে হাট-বাজার, অফিস-আদালত সব জায়গায় পুরুষের চেয়ে নারীর অংশগ্রহণ অনেক বেশি। এসব নারীর কর্মব্যস্ততা এতই বেশি যে, কাকডাকা ভোর থেকে রাত অবধি ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের।

ভোরে সূর্য উঁকি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি ছড়া বা নদীর ঘাটে থালা-বাসন ধোয়া, দূরদূরান্তের ঝিরি-ছড়া থেকে খাবার পানি সংগ্রহ, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ, রান্নাবান্না, সন্তান লালন-পালনসহ জুম এবং ক্ষেত-খামারে কাজ করতে হয় জুম্ম নারীদের।

এ নারীদের শুধু সাংসারিক এসব কাজে মেতে থাকলেই চলে না। চরকায় সুতা কেটে ঐতিহ্যবাহী কোমর তাঁতে কাপড় ও পোশাক বোনার কাজও তাদের। এ ছাড়া হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল, শূকরসহ বিভিন্ন পশুপাখি লালন-পালনের দায়িত্বও থাকে নারীদের উপর।

স্কুল-কলেজ পড়ুয়া মেয়েদেরও গৃহস্থালির সব কাজে সহযোগিতা করতে হয়। পূজা-পার্বণ, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সামাজিকতায়- সবক্ষেত্রে তাদের উপস্থিতি ও অংশীদারিত্ব ঈর্ষণীয়।

পাহাড়ের অর্থনীতিতে এখন নারীরা রাখছে গুরুত্বপূরর্ণ ভূমিকা। জুমের ফসল, ক্ষুদ্র কুটির শিল্পে তৈরি বিভিন্ন পণ্যসহ বন-জঙ্গল থেকে আহরিত লাকড়ি, ফলমূল, তরিতরকারি, হাট-বাজারে বিক্রি করছে পাহাড়ি নারীরা। শুধু পাহাড়ের গ্রামীণ জনপদে নয়, শহরের চিত্রও একই।

শহুরে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত পাহাড়ি পরিবারের মেয়েরা ব্যস্ত সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে। অফিস-আদালতে চাকরির পাশাপাশি তারা সামলাচ্ছেন পারিবারিক ও গৃহস্থালির যাবতীয় কাজ। যারা কম শিক্ষিত তারা পারিবারিক আয়-রোজগারের জন্য হাঁস-মুরগি, গাভী, শূকর পালন, সেলাই কাজ, মদ উৎপাদন করে থাকেন। একসময় শুধু পুরুষরা হাটে-বাজারে পণ্য কেনাবেচা করতে এলেও এখন নারীরাও পিছিয়ে নেই।

ইদানীং উল্লেখযোগ্য পাহাড়ি নারী উচ্চশিক্ষা লাভ করে সরকারি-বেসরকারি দায়িত্ব পালন করছেন। ভূমিকা রাখছেন জাতীয় উন্নয়নে।

পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর এ যেন আত্মোন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও বেঁচে থাকার সংগ্রাম।

(দিরিপোর্ট২৪/ওএস/এএস/জেএম/অক্টোবর ০৭, ২০১৩)