জ্যোতি বসু
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৯৭৭ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত একটানা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন ভারতের সবচেয়ে বেশি মেয়াদের মুখ্যমন্ত্রী। এ ছাড়া ১৯৬৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সিপিআই (এম) দলের পলিটব্যুরো সদস্য ছিলেন।
ডা. নিশিকান্ত বসু ও হেমলতা বসুর তৃতীয় সন্তান জ্যোতি বসুর জন্ম ১৯১৪ সালের ৮ জুলাই কলকাতার ৪৩/১ হ্যারিসন রোডের (বর্তমান মহাত্মা গান্ধী রোড) বাসভবনে। বসু পরিবারের আদিনিবাস ছিল বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ের বারদী গ্রামে।
১৯২০ সালে তিনি ধর্মতলার লোরেটো স্কুলে এবং ১৯২৫ সালে দ্বিতীয় শ্রেণীতে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে ভর্তি হন। ওই স্কুল থেকেই সিনিয়র কেমব্রিজ (নবম শ্রেণী) পাস করেন। ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স করেন প্রেসিডেন্সি কলেজে। ১৯৩৫ সালে আইন বিষয়ে পড়তে যুক্তরাজ্যে যান। লন্ডনে থাকাকালে সেখানকার ভারতীয় ছাত্রদের নিয়ে গড়ে ওঠা লন্ডন মজলিশের প্রথম সম্পাদক হন তিনি। ব্যারিস্টারি পাঠ ও যোগ্যতা অর্জনের পর ১৯৪০ সালের ১ জানুয়ারি ভারতে ফিরে আসেন।
ইংল্যান্ডে থাকাকালে কমিউনিস্ট ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন বসু। ১৯৪০ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ পান। ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলা প্রদেশের প্রাদেশিক আইনসভায় কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিরূপে নির্বাচিত হন। দেশ ভাগের পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। ড. বিধানচন্দ্র রায়ের মুখ্যমন্ত্রিত্বে তিনি হন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলের নেতা। ১৯৬৪ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির বিভাজনের পর যোগ দেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) বা সিপিআই (এম) দলে। ১৯৬৭ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হন। ১৯৭৭ সালের ২১ জুন শপথ নেন পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। ১৯৯৬ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নাম বিবেচিত হলেও পার্টির সিদ্ধান্তে সেই পদ প্রত্যাখ্যান করেন। টানা ২৩ বছর মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০০০ সালের ৬ নভেম্বর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাতে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করে অবসর নেন।
তার প্রথম স্ত্রীর নাম বাসন্তী ঘোষ। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৯৪৮ সালে বিয়ে করেন কমল বসুকে।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি বসু বিধাননগরের অ্যাডভান্সড মেডিকেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (আমরি হসপিটাল) ভর্তি হন। ১৭ দিন অসুস্থ থাকার পর ১৭ জানুয়ারি ভারতীয় সময় সকাল ১১টা ৪৭ মিনিটে জ্যোতি বসুর জীবনাবসান হয়।
(দ্য রিপোর্ট/ডব্লিউএসি/এপি/শাহ/জানুয়ারি ১৭, ২০১৪)