কলকাতা প্রতিনিধি : চলে গেলেন না ফেরার দেশে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন। কলকাতার মিন্টো পার্কের বেলভিউ হাসপাতালে শুক্রবার স্থানীয় সময় সাড়ে ৮টায় ৮৩ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে ২৬ দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সুচিত্রা সেনকে৷ শুক্রবার ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।

উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয়ের জন্য সুচিত্রার জনপ্রিয়তা পৌঁছে আকাশছোঁয়া। উত্তম-সুচিত্রা জুটি আজও বাংলা চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ জুটি হিসেবে বিবেচিত। ১৯৮০ সালে মহানায়কের জীবনাসানের পর নিভৃত জীবনযাপন করতেন সুচিত্রা।

ভারতীয় অভিনেত্রীদের মধ্যে তিনিই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার পান। ‘সাত পাকে বাঁধা’ সিনেমার জন্য ১৯৬৩ সালে মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে জয় করেন শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার।

১৯৫২ সালে শেষ কোথায় সিনেমার মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু এ সিনেমাটি মুক্তি পায়নি।পরের বছর মুক্তি পায় নির্মল দাস পরিচালিত সিনেমা সাড়ে চুয়াত্তর। এ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালির হৃদয়ে পাকা স্থান করে নেন সুচিত্রা। ১৯৫৫ সালের দেবদাস সিনেমার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন। এটি ছিল সুচিত্রা অভিনীত প্রথম হিন্দি সিনেমা।

১৯৫৭ সালে হারানো সুর সিনেমাতে উত্তমের সঙ্গে প্রথম জুটি বাঁধেন। এরপর এই জুটি পথে হলো দেরি, রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত, সূর্যতোরণ, ইন্দ্রাণী, বিপাশা, সাত পাকে বাঁধা ছবির মতো কালোত্তীর্ণ সিনেমা উপহার দেন।

২৫ বছর অভিনয়ের পর ১৯৭৮ সালে তিনি চলচ্চিত্র থেকে অবসর নেন। এরপর তিনি একপ্রকার লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান। রামকৃষ্ণ মিশনের সেবায় ব্রতী হন। ২০০৫ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের জন্য সুচিত্রা সেন মনোনীত হলেও ভারতের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে সশরীরে পুরস্কার নিতে দিল্লি যাওয়ার আপত্তি জানান। এ কারণে তাকে সে পুরস্কার দেওয়া হয়নি।

সুচিত্রা সেনের মেয়ে মুনমুন সেন এবং নাতনি রিয়া সেন ও রাইমা সেনও চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন।

১৯২৯ সালে মতান্তরে ১৯৩১ সালে জন্ম নেওয়া পাবনার মেয়ে রমা দাশগুপ্ত চলচ্চিত্র জীবনে সুচিত্রা সেন নাম নিয়ে জয় করেন লাখ-কোটি বাঙালির হৃদয়।

(দ্য রিপোর্ট/এসএম/এমডি/শাহ/জানুয়ারি ১৭, ২০১৪)