দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের পদ্মা ও যমুনার পানি প্রবাহ তিন ভাগের এক ভাগে নেমে আসবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন)। এতে করে বাংলাদেশের নদী, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলেও সংগঠন দুইটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তারা।

‘ভারতীয় আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের প্রথম সংযোগ (কেন-বেতওয়া) বাস্তবায়ন ও বাংলাদেশের উপর এর প্রভাব’ বিষয়ে বাপা ও বেন আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের লক হ্যাভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও ভূতত্ত্ব বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান।

ভারতের এ প্রকল্পের কারণে বাংলাদেশের অনেক গভীর, দীর্ঘমেয়াদী ধ্বংসাত্মক ও অবধারিত ক্ষতি হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারত আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ৩০টি সংযোগের মাধ্যমে পানি স্থানান্তরের এক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এতে ১৪টি হিমালয়ান নদী ও ১৬টি উপদ্বীপবর্তী (পেনিনসুলা) নদীর সংযোগ অন্তর্ভুক্ত আছে। বাংলাদেশের ক্ষতির কথা বিবেচনায় না নিয়ে ভারত এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে। বাংলাদেশ সরকারও এ বিষয়ে কিছু বলছে না।’

ভারতকে এ প্রকল্প বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বাপার সাধারণ সম্পাদক ড. এম এ মতিন বলেন, ‘ভারতকে অবশ্যই এ প্রকল্প বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ সরকারকেও এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।’

বাপার নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রকল্প অর্থনৈতিক ও পরিবেশগতভাবে ক্ষতিকর। আন্তর্জাতিক আইন না মেনে, কোনো ধরনের বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা ছাড়াই ভারত এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের উচিত এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন ও মিহির বিশ্বাসসহ বাপা ও বেনের সঙ্গে সম্পৃক্তরা।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালে জনস্বার্থে করা একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় হাইকোর্ট ২০১৬ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সে দেশের সরকারকে নির্দেশ দেয় বলে জানা গেছে।

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এমডি/এএল/জানুয়ারি ১৮, ২০১৪)