ঢাবি প্রতিবেদক : মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, সাম্প্রদায়িক হামলা এখন একটি বড় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আজ রাষ্ট্রের যে কোনো সমস্যায় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে। রাজনীতিবিদরা তাদের নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে শনিবার ‘ডায়ালগ অন পিস সিকিউরিটি এন্ড ডেমোক্রেসি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা পাকিস্তানকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছি। কিন্তু তারা তাদের বীজ জামায়াতে ইসলামকে এদেশের মাটিতে রেখে গেছে। তারা এখন দেশকে আবার অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য নানা পাঁয়তারা করছে। এর জন্য অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণকে বেছে নিয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগ ও অক্সফামের যৌথ উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

আলোচনা সভায় ‘রিলিজিয়াস মাইনরিটিস বিফোর এন্ড আফটার ন্যাশনাল ইলেকশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান।

সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, এ সব হামলায় শুধু বিএনপি-জামায়াত জড়িত নয়। বারবার তাদের কথা বলে মূল দোষীদের এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ সকল হামলার সঙ্গে সরকারদলীয় লোকজনও জড়িত রয়েছে। ঐ সব এলাকায় কর্তব্যরত গোয়েন্দাদের কাছে এর যথেষ্ট তথ্যও রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। জাতি হিসেবে আমাদের জন্য এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক। অবিলম্বে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা হয়ে আসছে। বর্তমানে এর মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। এর মূল কারণ সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রকটতা। এই সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠীকে অবিলম্বে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে হবে। অন্যথায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বেড়েই চলবে।

দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পরবর্তী সময়ে হামলাকারীদের অনেককে সনাক্ত করা গেলেও তাদের বিচার না করার মাধ্যমে রাষ্ট্র হামলাকারীদের আরও উস্কিয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা।

আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জাহিদ আরেফিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমএম আকাশের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সম্প্রীতি মঞ্চের সভাপতি ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. অজয় রায়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমির, দৈনিক সমকালের সহযোগী সম্পাদক অজয় দাশগুপ্ত প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/জেএইচ/এপি/আরকে/জানুয়ারি ১৮, ২০১৪)