ইসহাক ফারুকী, দ্য রিপোর্ট : নবীন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পরীমনিকে পাওয়া গেল বিএফডিসিতে। নজরুল ইসলাম খানের ‘রানা প্লাজা’ চলচ্চিত্রে ‘রেশমা’ চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। দ্য রিপোর্টের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানালেন তার বর্তমান ব্যস্ততার কথা।

দ্য রিপোর্ট : রানা প্লাজা চলচ্চিত্রটি প্রসেঙ্গ কিছু বলুন?

পরীমনি : এটা আমার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। কদিন আগে শুরু হয়েছে। রানা প্লাজার ভয়াবহতা দেখেছি। রেশমার বেঁচে আসা দেখেছি। সাধারণ মানুষের এর প্রতি অনেক আগ্রহ ছিল। সে জন্যই চরিত্রটি করতে রাজি হয়েছি। এটা আমার জন্য অনেক বড় সুযোগ। আরও ভাল কিছু কাজ করতে চাই।

দ্য রিপোর্ট : আর কোনো চলচ্চিত্রে কাজ করছেন?

পরীমনি : শাহ আলম মণ্ডলের ‘ধান্দা এজেন্সি ডটকম’, ‘ভালবাসার চেয়ে একটু বেশি’, অপূর্ব রানার ‘ইনোসেন্ট লাভ’, এফ আই মানিকের ‘জানে না এ মন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করব। সাইন করেছি মাত্র।

দ্য রিপোর্ট : শুরুটা তো নাটক দিয়ে?

পরীমনি : হ্যাঁ, ইদ্রিস হায়দারের ‘সেকেন্ড ইনিংস’ ধারাবাহিক দিয়ে শুরু করেছিলাম। তবে ওই নাটকে আমার অভিনয় করার কথা ছিল না। আমার কাজিন সজল সেকেন্ড ইনিংসের প্রযোজক। ও আমাকে অনেক বলেছে নাটকে কাজ করতে। আমি করিনি। একদিন ও বলল, সেকেন্ড ইনিংস নাটকে একটা মেয়ে প্রয়োজন, যে নাচ-গান পারে। তারপর আরেক দিন আমাকে না জানিয়ে নিয়ে গেল ইদ্রিস হায়দারের বাসায়। উনি আমাকে দেখে কাজ করার প্রস্তাব দেন। আর বললেন, তুমি পারবে। প্রথমে রাজি না হলেও পরে রাজি হয়ে যাই। চলচ্চিত্রের অনেকেই অভিনয় করছেন ওই নাটকে। তাদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে মনে হলো, আমি চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে পারি।

দ্য রিপোর্ট : চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গেলে অনেক কিছুই তো জানতে হয়?

পরীমনি : আমি যে কোনো চরিত্রে মানিয়ে নিতে পারি খুব সহজেই। আর নাচ-গান শিখেছি। তবে আমি বেশিদিন কোনো কিছু শিখতে পারি না। যেমন বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে (বাফা) কয়েক মাস নাচ শিখেছি। তারপর আর কন্টিনিউ করতে পারিনি।

দ্য রিপোর্ট : চলচ্চিত্রেই থাকবেন?

পরীমনি : অবশ্যই, আজীবন চলচ্চিত্রে থাকতে চাই। এ ব্যাপারে পরিবারের কাছ থেকে অনেক সাপোর্ট পাচ্ছি।

দ্য রিপোর্ট : আপনি নাকি অনেক হাসেন?

পরীমনি : হ্যাঁ, (হাসি) আমার হাসতে অনেক ভাল লাগে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়েও হাসি। আমি কাঁদতে গেলে মনে হয়, আমি কেন কাঁদছি। ভেবেই আবার হাসতে শুরু করি। আমার রাগ বেশিক্ষণ থাকে না।

দ্য রিপোর্ট : নিজের সম্পর্কে সরল স্বীকারোক্তি?

পরীমনি : খুব কঠিন প্রশ্ন। হুম্ম, মিথ্যা একদমই পছন্দ করি না। আমার মধ্যে কোনো লুকোচুরি নেই। যা বলি, সবার সামনেই বলি।

দ্য রিপোর্ট : এ জন্য সমস্যা হয় না?

পরীমনি : হয়, এ জন্য অনেকেই আমাকে অপছন্দ করে। কিন্তু আমি যা সত্যি তাই বলব।

দ্য রিপোর্ট : চলচ্চিত্রের প্রস্তাব আসলে তা কিভাবে নির্বাচন করেন?

পরীমনি : আমার তো বাবা মা নেই। নানা-নানু্ই আমার সব। নানা টিচার তো। উনিই আমাকে পরামর্শ দেন, কোন চলচ্চিত্র কেমন, চরিত্র কেমন-কোনটা করব?

দ্য রিপোর্ট : বাবা-মায়ের জন্য কখনও খারাপ লাগে না?

পরীমনি : মা মারা গেছেন আমার তিন বছর বয়সে। আর বাবা ১৭ মাস আগে। তবে বাবা বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকতেন। নানা-নানু কখনও বুঝতে দেয়নি যে, আমার বাবা-মা নেই।

দ্য রিপোর্ট : (প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে) পরী নামটি কিভাবে এলো?

পরীমনি : এটা আমার পারিবারিক নাম। পরী হচ্ছে নাম। আর আদর করে পরীমনি ডাকে। মিডিয়ায় আসার পরে কেউ কেউ বলেছিল, নামটি পরিবর্তন করবে নাকি? কেউ কেউ বলেছে, না। প্রয়োজন নেই। চলচ্চিত্রে একজনই পরী থাকবে। অনেকে বলে, পরী আনকমন নাম। আমার মতে, পরী অনেক কমন নাম। এখন পর্যন্ত আমার দেখা নয়জন পরী আছে। তবে আমার আসল নাম কিন্তু শামসুন নাহার। নানাভাই শামসুল হক থেকে এই নামটি এসেছে। আর দাদাবাড়িতে সবাই জান্নাত নামে ডাকে।

(দ্য রিপোর্ট/আইএফ/এমসি/এএল/জানুয়ারি ১৯, ২০১৪)