যাযাবর যত প্রাণী
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : মানুষের মতো অনেক প্রাণীরও কিন্তু বোহেমিয়ান স্বভাব আছে! তাদের মধ্যে অনেক প্রাণী প্রজনন ঋতুতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পাড়ি জমায় আরেক জায়গায়। অনেক প্রাণী আবার প্রতিকূল পরিবেশ ছেড়ে অনুকূল পরিবেশের খোঁজে বেড়িয়ে পড়ে চেনা জগৎ ছেড়ে। এমন কিছু যাযাবর প্রাণী নিয়ে এই আয়োজন।
লাল কাঁকড়া
প্রতিবছর বসন্তকালে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিসমাস দ্বীপের ওপর যেন লাল চাদর বিছিয়ে দেওয়া হয়। আর এই লাল চাদর বিছানোর কাজটি করে লাখ লাখ লাল কাঁকড়ার দল। ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন দ্বীপ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে কাঁকড়া সমুদ্রের অভিমুখে প্রজননের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। প্রজনন ঋতু শেষে আবার ফিরে আসে স্বস্থানে।
সেরেঙ্গেটির যাযাবর প্রাণীরা
তানজানিয়ার সেরেঙ্গেটি অঞ্চলের লাখ লাখ বন্যপ্রাণী প্রতিবছর খাবার ও পানির খোঁজে বিপদসংকুল গ্রুমেতি নদী পার হয়ে দক্ষিণ কেনিয়ার মাসাইমারা অঞ্চলে যায়। সেখান থেকে আবার ফিরে আসে সেরেঙ্গেটিতে। গ্রুমেতি নদী পার হওয়ার সময় তারা প্রায়ই কুমিরের আক্রমণের শিকার হয়।
ছোট পাখির দল
প্রতিবছর শীতকালে এক জাতের খুদে পাখির দল বাড়িঘর ছেড়ে পাড়ি জমায় অপেক্ষাকৃত গরম অঞ্চলে। এ বছর তারা পাড়ি জমিয়েছে ইসরায়েলে। তাদের একসঙ্গে ওড়াউড়ি দেখে মনে হতে পারে একখণ্ড কালো মেঘ উড়ছে আকাশে।
সামুদ্রিক কচ্ছপ
প্রজনন ঋতুতে মা কচ্ছপ ডিম পাড়ার জন্য হাজার হাজার মাইলও পাড়ি দেয়। তবে এ সব কচ্ছপের ডিম ও বাচ্চা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রেহাই পায় না শিকারির নির্মম ছোবল থেকে।
লম্বা গলার সারস
মেক্সিকো, অ্যারিজোনা ও নিউ মেক্সিকো থেকে প্রতিবছর শীতকালে দলে দলে সারস কলোরাডোর সান লুইস ভ্যালিতে পাড়ি জমায়। শীত শেষে আবার ফিরে যায় তাদের গ্রীষ্মকালীন আবাসে।
হাতির প্যারেড
খাদ্য ও প্রজননের জন্য হাজার মাইল পাড়ি দেয় স্থলের সবচেয়ে বড় প্রাণী হাতিও। মানুষের কারণে হাতির চলাচলের অনেক পথই ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে শ্রীলঙ্কার মিনেরিয়াকে আজো হাতিরা বেছে নেয় তাদের প্রজননের স্থান হিসেবে। প্রতিবছর আগস্টে এখানে আসে তারা।
রঙিন পাখার প্রজাপতি
প্রতিবছর অক্টোবর থেকে হাজার হাজার রাজকীয় প্রজাপতি প্রজননের উদ্দেশে ক্যালিফোর্নিয়ার প্যাসিফিক গ্রুভে চলে আসে। তাদের প্রজনন ঋতু চলতে থাকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত।
তিমি
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাণী তিমিও প্রতিবছর জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত অ্যান্টার্কটিকা উপদ্বীপ থেকে কলম্বিয়ায় যায় প্রজননের উদ্দেশে।
রাজহাঁস
গুজরাটের রাজধানী আহমেদাবাদের কাছে পাখিদের অভয়ারণ্য নাল সরোবরে প্রতিবছর শীত ও বসন্তকালে ভিড় জমায় হাজার হাজার রাজহাঁস। নাল সরোবর ভারতে অতিথি পাখির অন্যতম আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত।
সার্ডিন মাছের দৌড়
প্রতিবছর মে-জুনে হাজার হাজার সার্ডিন মাছ দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্ব উপকূল থেকে ডিম পাড়তে উত্তর উপকূলের দিকে যায়।
সার্ডিনের এই সাময়িক গৃহত্যাগ আকৃষ্ট করে মানুষসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীকে। এ সময় হাঙ্গর, ডলফিন আর সামুদ্রিক পাখির সহজ শিকারে পরিণত হয় তারা। এ ছাড়া, মৎসজীবীদের জাল থেকেও রক্ষা পায় না সার্ডিনের ঝাঁক।
(দ্য রিপোর্ট/ কেএন/ এমডি/এএল/জানুয়ারি ১৯, ২০১৪)