দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : অর্থ পাচার মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আত্মসমর্পণের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার শুনানি শেষে রবিবার দুপুরে আদালত এই আদেশ দেন।

বিচারপতি নিজামুল হক ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চে তারেক রহমানের খালাসের আদেশ বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আপিল আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নে শুনানি শেষে আদালত তাকে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। তবে তারেকের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

এর আগে বৃহস্পতিবার তারেক রহমানের খালাসের আদেশ বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আপিল আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নে শুনানি শুরু হয়।

বৃহস্পতিবারের শুনানিতে খুরশীদ আলম খান বলেন, সাক্ষীর জবানবন্দি ভালোভাবে বিবেচনা না করে নিম্নআদালত রায় দিয়েছেন। এফবিআই কর্মকর্তাসহ অন্য সাক্ষ্য এবং দলিলাদি ভালোভাবে বিবেচনা করলে রায় ভিন্ন হতে পারত।

এর আগে, সকালে তারেকের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী দুই সপ্তাহ সময় চান। আদালত সেই আবেদনে সাড়া না দিয়ে দুপুরের পর শুনানি শুরু করেন। খুরশিদ আলমের শুনানি শেষে রবিবার পুনঃশুনানির জন্য দিন ধার্য করে।
আইনজীবী আরও বলেন, আপিল গ্রহণযোগ্যতা বিবেচিত হলে জজকোর্টের নথি আসবে। এরপর পেপারবুক তৈরির মাধ্যমে আপিল প্রস্তুত হবে এবং মূল আপিল শুনানি শুরু হবে।
গত ৫ ডিসেম্বর অর্থ পাচার মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের খালাসের আদেশ বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে দুদক।
দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান ওই দিন বলেছিলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেওয়া মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষ্য বিবেচনা না করে এ রায় দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ওই মামলায় তারেক রহমানকে যথাযথ সাজা প্রদানের আবেদন জানানো হয় আপিল আবেদনে।

এর আগে, দুদকের করা অর্থ পাচার মামলায় গত ১৭ নভেম্বর তারেক রহমানকে খালাস প্রদান করেন ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মো. মোতাহার হোসেন।
তবে এ মামলার অপর আসামি তারেকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তাকে ৪০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
২০০৯ সালে ২৬ অক্টোবর দুদকের সহকারি পরিচালক মো. ইব্রহিম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০০২-এর ১৩ ও ২(অ)(আ)(ঠ) ধারায় তারেক রহমান ও তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ২০০৯ সালের ৬ জুলাই দুদক তারেক ও মামুনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১১ সালে ৮ আগস্ট আদালত মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের কয়েকটি ধারায় অভিযোগ গঠন করেন।
আসামিপক্ষ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করলে আদালত ২০১১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আবেদন খারিজ করে দেন।
পরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এ মামলাটির কার্যক্রম শুরু হয়। ২৩ অক্টোবর ২০১৩ সালে রাষ্ট্রপক্ষের সকল সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এসএ/এমডি/সা/জানুয়ারি ১৯, ২০১৪)