সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গণসমাবেশে বিএনপির শো-ডাউনের প্রস্তুতি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সোমবার বিএনপির গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এ সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। নেতাকর্মীদের ভাঙা মনোবল ফিরিয়ে আনতেই এই সমাবেশে ব্যাপক শোডাউনের পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। ঢাকা মহানগর পুলিশ রবিবার সন্ধ্যায় বিরোধী দলের এ সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে।
৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর এটাই হবে খালেদা জিয়ার প্রথম গণসমাবেশ। এ কারণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ কর্মসূচি সফল করতে নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাইকমান্ডের নির্দেশে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোয় চলছে সর্বাত্মক প্রস্তুতি।
সমাবেশ সফল করতে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা মহানগরসহ রাজধানীর আশপাশের জেলার বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। এ ছাড়া কারাগারে থেকেও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা তার অনুসারীসহ মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের গণসমাবেশ সফল করার নির্দেশনা দিয়েছেন। খালেদা জিয়ার নির্দেশে দলের দায়িত্বশীল নেতারা রাজধানীর সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন।
সূত্র জানায়, এ সমাবেশে নেতাকর্মীদের মনোবল অটুট রেখে আন্দোলন অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। একইসঙ্গে শিগগির দেশের বিভিন্ন শহরে সভা-সমাবেশে নিজের যোগ দেওয়ার ঘোষণাও দিতে পারেন তিনি।
বিএনপি সূত্র জানায়, সরকারের একতরফা নির্বাচন বর্জন করায় বিএনপির পক্ষ থেকে জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে বিএনপি। এ লক্ষে ১৩ জানুয়ারি মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে সদস্য সচিব আবদুস সালাম ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কাছে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন।
বিএনপির সহ দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি দ্য রিপোর্টকে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেন।
মহানগর পুলিশের অনুমতির বিষয়টি দ্য রিপোর্টকে নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (মিডিয়া) উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, বিএনপির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১২টি শর্ত সাপেক্ষে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বিএনপি সূত্রে জানা যায়, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া যে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না তা ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে দেশবাসী প্রমাণ করেছে বলে বিশ্বাস করে বিএনপি। এ কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সোমবারের গণসমাবেশে লাখ লাখ জনতার ঢল নেমে আসবে বলে দলটি আশা করছে।
১৫ জানুয়ারি রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সোমবারের গণসমাবেশের ঘোষণা করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, বিরোধী দলের ভোট বর্জনের ডাকে দেশবাসী সাড়া দিয়েছে।
সমাবেশ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শুক্রবার বিকেলে মির্জা ফখরুল ঢাকা মহানগরসহ রাজধানীর আশপাশের সাংগঠনিক সাত জেলা ও মহানগর নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির অঙ্গ সংগঠনগুলোও সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা দ্য রির্পোটকে বলেন, সমাবেশ সফল করতে আমাদের শতভাগ প্রস্তুতি আছে। সমাবেশ সফল হবেই।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমদ আযম দ্য রিপোর্টকে বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিল্পব ঘটিয়েছে। খালেদা জিয়ার ডাকে ৫ জানুয়ারি দেশের মানুষ ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে প্রহসনের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, গণসমাবেশ লাখ লাখ জনতা রাস্তায় নেমে আসবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জনসমুদ্রে পরিণত হবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বড় ধরনের শোডাউনের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতেই এমন কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক ইউনিটকে মিছিল সহকারে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহানগরীর প্রত্যেক ইউনিটকে সক্রিয়ভাবে এ কর্মসূচি সফল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে দলের প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদীন ফারুক দ্য রিপেটার্টকে বলেন, ঢাকা মহানগরীতে নেতাকর্মীরা ধীরে ধীরে উজ্জীবিত হচ্ছে। সারাদেশে আমাদের আন্দোলন সফল হয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীর নেতাকর্মীরা সমাবেশ সফল করতে ইতিমধ্যে যৌথসভা করেছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন কর্মসূচি সমাবেশ সফর করতে ঢাকার মহানগরী অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
(দ্য রিপোর্ট/টিএস-এমএইচ/এসবি/ এনআই/জানুয়ারি ১৯, ২০১৪)