দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের দুটি প্যাকেজের ব্যয় বেড়েছে ২৬ কোটি ২৮ লাখ ২৩ হাজার টাকা। প্যাকেজ-১ এর ব্যয় বেড়েছে ১৬ কোটি ৫৭ লাখ ৭২ হাজার টাকা। প্যাকেজ-২ এর ব্যয় বেড়েছে নয় কোটি ৭০ লাখ ৫১ হাজার টাকা।

ব্যয় বৃদ্ধির এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপান করা হবে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে এটি জানা যায়।

সড়ক বিভাগের সচিব এমএএন ছিদ্দিক এ প্রসঙ্গে বলেন, বাস্তব কারণেই প্রকল্পে দুটি প্যাকেজের ব্যয় বেড়েছে। ডেভেলপমেন্ট অব প্রজেক্ট প্রোপোজালে (ডিপিপি) অনেক বিষয় সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি।

যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগ জানায়, প্রকল্পে ১নং প্যাকেজের আওতায় এক লাখ ৭০ হাজার ৯৭০ ঘনমিটার মাটির কাজ, ১৯ হাজার ৫৮৩ ঘনামিটার সোয়াম্প ফিলিং, ছয় দশমিক ৫০ কিলোমিটার পেভমেন্ট নির্মাণ, আট কিলোমিটার সার্ফেসিং, উভয় পাশে তিন দশমিক ৭০ কিলোমিটার সার্ভিস লেন নির্মাণ, তিনটি আরসিসি বক্স কালভার্ট, তিন কিলোমিটার ড্রেন, উভয় পাশে তিন দশমিক ৭২ কিলোমিটার ফুটপাত, দুটি ইন্টারসেকশন ও দুটি বাস-বে নির্মাণ করা হবে। সেমার্স মীর আখতার হোসেন লিমিটেড ৪৩ কোটি ২৭ লাখ ২৬ হাজার টাকায় এ প্যাকেজের কাজ পায়। ব্যয় বৃদ্ধির পর তা দাঁড়িয়েছে ৫৯ কোটি ৮৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকায়।

ক্রয় কমিটির সভার জন্য প্রস্তুত করা সার-সংক্ষেপ থেকে জানা গেছে, ১নং প্যাকেজে মাটির কাজের ব্যয় বেড়েছে তিন কোটি ৩৭ লাখ ২৩ হাজার টাকা, পেভমেন্টের বৃদ্ধি ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, জেনারেল অ্যান্ড সাইট ফ্যাসিলিটিস ব্যয় বেড়েছে ১০ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। তবে স্ট্রাকচারে ব্যয় কমেছে ৫৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা।

২নং প্যাকেজের আওতায় এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৩৯ ঘনমিটার মাটির কাজ, ২২ হাজার ১৩০ ঘনামিটার সোয়াম্প ফিলিং, সাত দশমিক ছয় কিলোমিটার পেভমেন্ট নির্মাণ, আট কিলোমিটার সার্ফেসিং, উভয় পাশে এক দশমিক ৩০ কিলোমিটার সার্ভিস লেন নির্মাণ, সাতটি আরসিসি বক্স কালভার্ট, তিন কিলোমিটার ড্রেন, উভয় পাশে দুই দশমিক ২৫ কিলোমিটার ফুটপাত ও দুটি বাস-বে নির্মাণ করা হবে। এমবিইএল-বিআরটি ৪১ কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার টাকায় এ প্যাকেজের কাজ পায়।

এই প্যাকেজে মাটির কাজের ব্যয় বেড়েছে এক কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা, পেভমেন্টের বৃদ্ধি ১১ কোটি চার লাখ ৩০ হাজার টাকা, জেনারেল অ্যান্ড সাইট ফ্যাসিলিটিস ব্যয় বেড়েছে এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা। তবে স্ট্রাকচারে ব্যয় কমেছে দুই কোটি ৪২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।

নবীনগর-চন্দ্রা সড়কটি রাজধানীর সঙ্গে সমগ্র উত্তরাঞ্চল ও বৃহত্তর ময়মনসিংহের যোগাযোগের অন্যতম করিডোর। ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের উভয় পাশে ঢাকা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলসহ (ডিইপিজেড) অনেক বড় শিল্প কারখানা, বিনোদন পার্ক, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান অবস্থিত। ফলে এ সড়কে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসনে ২০১০ সালের ৩১ আগস্ট একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৫ কোটি ৬০ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। মেয়াদ ছিল ২০১০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১১ সালের ৩১ জুন পর্যন্ত। ৪ জুন প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে হয় ১৩০ কোটি ৮৪ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। সময়ও চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু এখনো প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। যদিও এ প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে প্রক্রিয়াধীন।

প্রকল্পের আওতায় ১৬ কিলোমিটার সড়ক দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীতকরণ, দুটি পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ, দুটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, নয়টি আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, পাঁচ কিলোমিটার সার্ভিস লেন নির্মাণ, ছয় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ, ছয় কিলোমিটার সাইড ড্রেন নির্মাণ করা হবে।

(দিরিপোর্ট২৪/আরএম/এমএআর/অক্টোবর ৩১, ২০১৩)