কমান্ডহীন জবি ছাত্রদল, হতাশ কর্মীরা
নীতিনির্ধারকদের সমন্বয়হীনতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও ‘সুপার ফাইভ’ কমিটির তীব্র অন্তর্দ্বন্দ্বে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদল কমিটির চেন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়েছে। এতে করে হতাশ হয়ে পড়েছেন কর্মীরা। একাধিক ত্যাগী নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য প্রদান করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। প্রায় অর্ধশত কর্মী এ ব্যাপারে দ্য রিপোর্টের কাছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
ছাত্রদলকর্মী ওমর ফারুক কাওসার বলেন, সুপার ফাইভের অনেকে দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না। ফলে কর্মীরা আন্তরিক থাকলেও তাদের সমন্বয়হীনতায় সংকট বাড়ছে।
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের চার সেপ্টেম্বর ফয়সাল আহমেদ সজলকে সভাপতি ও ওমর ফারুক মুন্নাকে সাধারণ সম্পাদক করে সুপার ফাইভ কমিটি গঠন হয়। কমিটির অন্যরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি রাজীব রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল আশরাফ মামুন ও সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম মহসিন বিশ্বাস।
অনুসন্ধানে জানা যায়, তীব্র অন্তর্দ্বন্দ্বে দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিক কোনো কর্মকাণ্ডে একসঙ্গে দেখা যায়নি শীর্ষ এই পাঁচ নেতাকে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গুটিকয়েক পৃথক কর্মসূচি নিলেও সাংগঠনিক সমন্বয় ছিল না।
সাম্প্রতিক হরতাল-অবরোধে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক একত্রিত হয়ে কোনো কর্মসূচি পালন করেননি। কর্মীরা দেখা পাননি খোদ সভাপতি ফয়সাল আহমেদ সজলের।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক মুন্না বলেন, নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করেই সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো হবে। কেউ কেউ হয়তো কোনো সমস্যার কারণে আন্দোলনে আসছেন না। তবে সবাইকে নিয়েই আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছি। এ ছাড়া প্রায় ৮৫ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বলে দ্য রিপোর্টকে জানান তিনি।
এদিকে কমিটি গঠনের পর থেকেই কর্মীদের এড়িয়ে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি রাজীব রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল আশরাফ মামুন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মহসিন বিশ্বাস।
অন্তঃকোন্দল ও সাংগঠনিক দুর্বলতায় ছাত্রদলের সমন্বয়হীনতার কথা স্বীকার করলেও ব্যক্তিগত অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল আশরাফ মামুন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মহসিন বিশ্বাস। সাংগঠনিক কোন্দল থাকায় ব্যক্তিগত কারণেই এ সব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি করে তারা বলেন, ঘরে বসে যারা সরকারের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে রাজনীতি করছে তারাই এ সব প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে শীর্ষ নেতারা আত্নগোপনে থাকায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড গতিশীল হচ্ছে না বলেও দাবি করেন এই দুই নেতা।
(দ্য রিপোর্ট/ এলআরএস/ এসবি/ এনআই/জানুয়ারি ২০, ২০১৪)