দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চুরি-জালিয়াতির বিষয়ে সতর্ক থাকা, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা ও ঋণসীমা সমন্বয় করার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সচিবালয়ে সোমবার বিকেলে সকল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, একইসঙ্গে সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা করতে বলা হয়েছে। বর্তমান সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে এর সঙ্গে এ পরিকল্পনার কোনো সম্পর্ক নেই। যে সরকারই আসুক সেটা অব্যাহত থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ব্যাংকিং খাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে দেশের ব্যাংকিং খাত অনেক প্রসারিত হয়েছে। দশ টাকায় একাউন্ট খোলায় ব্যাংকিং খাতে জনগণের অংশগ্রহণ বেড়েছে, গ্রামাঞ্চলে ব্যাংকের শাখা খোলা হয়েছে। তবে ব্যাংকিং খাতে চুরি-জালিয়াতি হয়, এ ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে। খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে হবে ও ঋণসীমা সমন্বয় করতে হবে। এ সব ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে। দুর্নীতির কারণেই খেলাপি ঋণ বেড়ে যায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

‘বীমা খাতের লুটপাট ও চুরি দমন করা হবে’

বীমা খাত প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের বীমা খাতটি হচ্ছে অত্যন্ত জঘন্য ও দুর্বল একটি খাত। বীমা কোম্পানি মানে হচ্ছে লুটপাট ও চুরির ক্ষেত্র। এর কারণ হচ্ছে দেশে বীমার প্রসার ঘটেছে ব্যাপক। বর্তমানে ৭৬টি কোম্পানী রয়েছে। কিন্তু এগুলোর কোনো নিয়ন্ত্রণ এতদিন ছিল না। এখন সরকার বীমা কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ নিলেও এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এরকম ৫০টি কেসের ক্ষেত্রে খোঁজ নিলে দেখা যাবে প্রতিটির পেছনে বীমা কোম্পানি রয়েছে।’

বীমা কোম্পানিগুলোকে ‘দুষ্টু কোম্পানি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি আরো বলেন, ‘আমি তাদের সাবধান করে দিচ্ছি, তাদের ভদ্র ও যৌক্তিক হওয়া উচিত এবং তাদের চুরি-চামারি বন্ধ করা উচিত। অন্যথায় তাদের শক্ত হাতে দমন করা হবে’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন অর্থমন্ত্রী।

‘পুঁজিবাজার স্থিতিশীল’

পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজার অত্যন্ত শক্তিশালী হয়েছে এবং স্থিতিশীল রয়েছে। যা এর আগে কখনো ছিল না। আপনারা ভুল রিপোর্ট দেন।’

‘গত দুই বছর ধরেই পুঁজিবাজার সম্পূর্ণ স্থিতিশীল রয়েছে’ এমন দাবি করে তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারের উন্নয়নে গত দুই বছর ধরে সরকার অনেক নিয়ম-কানুন সংশোধন করেছে। এর ফলে এখন এটা যথার্থ পুঁজিবাজার হয়েছে, অর্থাৎ লোকে পুঁজির জন্যই এখন সেখানে যাচ্ছে, ব্যাংকের ঋণের ওপর নির্ভর করে না।’

প্রসঙ্গক্রমে তিনি আরো বলেন, ‘পুঁজিবাজারের ওঠা-নামা হবেই, কিন্তু ধস হওয়াটা অন্য জিনিস।’

(দ্য রিপোর্ট/এস আর/এসবি/এনআই/জানুয়ারি ২০, ২০১৪)