বেনাপোল বন্দরে শুল্ক ফাঁকির ঘটনা বাড়ছে
বেনাপোল সংবাদদাতা : একটি চক্র বেনাপোল কাস্টমস থেকে প্রতিনিয়ত শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পণ্য চালান নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে শুল্ক ফাঁকির এ ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। এ সব ঘটনার সঙ্গে কতিপয় অসাধু কাস্টমস ও ব্যবাসায়ী জড়িত রয়েছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে বেনাপোলে ১৭৯টি শুল্ক ফাঁকির ঘটনা উদঘাটন করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ সব ঘটনায় জরিমানা আদায় হয়েছে ২১ কোটি ৬৪ লাখ ৩ হাজার টাকা।
এর আগে ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে শুল্ক ফাঁকির ঘটনা ঘটে প্রায় ১০০টি। এ ঘটনায় জরিমানা আদায় করা হয় ১৭ কোটি ৩২ লাখ ২৩ হাজার টাকা। ২০১১-২০১২ অর্থ বছরে প্রায় ২৯৪টি শুল্ক ফাঁকির ঘটনায় ৩৪ কোটি ৬০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ২০১০-২০১১ অর্থবছরে ২১৮টি ঘটনায় আদায় করা হয় ১৮ কোটি ৭৬ লাখ ৫৪ হাজার ৫০ টাকা।
অভিযোগ রয়েছে বেনাপোল কাস্টমসের কিছু কর্মকর্তা, সিএন্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারকদের যোগসাজশে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি বাড়ছে।
এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার (১) ফাইজুর রহমান বলেন, ‘কতিপয় কাস্টমস কর্মকর্তা, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান, সিএন্ডএফ এজেন্টের সহযোগিতায় মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি চলছে। তবে আমরা শুল্ক ফাঁকির ঘটনা ধরতে পারলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।
বেনাপোল কাস্টমসের শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৬টি শুল্ক ফাঁকির ঘটনায় ৪ কোটি ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৬৭০ টাকা, আগস্টে ৪২টি ঘটনায় ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৬১ হাজার ৪৮২ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৩৬টি ঘটনায় ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৩০ হাজার ৪৫৬ টাকা, অক্টোবরে ২০টি ঘটনায় ২ কোটি ৭৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকা, নভেম্বরে ২৫টি ঘটনায় ৩ কোটি ১৬ লাখ ৯৬ হাজার ৫৬৪ টাকা এবং ডিসেম্বর মাসে ৩০টি শুল্ক ফাঁকির ঘটনায় জরিমানা আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪০ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৮ টাকা।
বেনাপোল কাস্টমসের শুল্ক বিভাগের সহকারী কমিশনার ওমর ফারুক বলেন, ‘কতিপয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান, সিএন্ডএফ এজেন্ট ও বন্দরের শেড ইনচার্জদের যোগসাজশে এ সব শুল্ক ফাঁকির ঘটনা ঘটছে। একটি চক্র এখানে গড়ে উঠেছে। আগামীতে শুল্ক ফাঁকি রোধে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির পক্ষে আমরা নই। তবে এ সব ঘটনার সঙ্গে অবশ্যই কাস্টমসের সম্পৃক্ততা রয়েছে। কেননা কাস্টমসের চোখ ফাঁকি দিয়ে শুল্ক ফাঁকি হতে পারেনা। শুল্ক ফাঁকি রোধে কাস্টমসকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।
(দ্য রিপোর্ট/জেএইচ/ডব্লিউএস/এসবি/এনআই/জানুয়ারি ২১, ২০১৪)