ফের পয়েন্ট খোয়ালো শেখ রাসেল
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সময় ভালো যাচ্ছে না গত মৌসুমের ট্রেবল জয়ী শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে এক ম্যাচ জিতেছে তো পরের ম্যাচেই পয়েন্ট খোয়াচ্ছে। মঙ্গলবার মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষেও পয়েন্ট হারিয়েছে ব্লুজ শিবির। ২-১ গোলে হেরে মাথা নিচু করে মাঠ ছেড়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
মুক্তিযোদ্ধার অবস্থাও ভালো না। চলতি লিগে অল-রেডদের এটি দ্বিতীয় জয়। ৫ ম্যাচে ২ জয়, এক ড্র ও ২ পরাজয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সপ্তম স্থান থেকে চতুর্থ স্থানে উঠেছে তারা। অন্যদিকে সমান ম্যাচে ২ পরাজয় ও ৩ জয়ে টেবিলে শেখ রাসেলের অবস্থান তৃতীয়।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরুতে অপরিচিত মনে হয়েছে শেখ রাসেলের ফুটবলারদের। প্রধমার্ধে বেশির ভাগ সময়ই বলের দখল ছিল মুক্তিযোদ্ধার। ১৫ মিনিটেই সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে অল-রেডদের। প্রতিপক্ষের বিপদ সীমানায় নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার এলিটা বেঞ্জামিনের থ্রো বক্সের মধ্যে থেকে হেড নিয়েছেন স্বদেশি ফরোয়ার্ড এলিটা কিংসলে। এ যাত্রায় শেখ রাসেলকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন অভিজ্ঞ গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য। শূন্যে লাফিয়ে বল গ্লাস বন্দি করেছেন তিনি।
২২ মিনিটে সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন শফিকুল ইসলাম মানিকের শিষ্যরা। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া এলিটার শট এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ফিরে এসেছে। ফিরতি বল ইকবাল বাড়িয়ে দিয়েছেন ফাঁকায় দাঁড়ানো এনামুলের উদ্দেশ্যে; ভুল করেননি এনামুল। তার শট বিপ্লবের চোখ ফাঁকি দিয়ে জালে আশ্রয় নিয়েছে (১-০)। প্রায় দেড় বছর ধরে গোল খরায় থাকা এনামুলের চলতি মৌসুমে এটাই প্রথম গোল।
বিরতির পর আরেকটি সুযোগ কাজে লাগিয়েছে অল-রেডরা। ৫০ মিনিটে ডিফেন্ডার সিরাজীর কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার শটে রাসেলের জাল কাঁপিয়েছেন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এনকোচা কিংসলে (২-০)। ৭৩ মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছিল শেখ রাসেল। বামপ্রান্ত থেকে মিঠুন চৌধুরী কাছ থেকে বল পেয়ে মরোক্কান ফরোয়ার্ড ইউনিস রক্সের প্রেসিং শট মুক্তিযোদ্ধার জালে জড়িয়েছে। ৮৪ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ হাত ছাড়া হয়েছে শেখ রাসেলের। বক্সের বাইরে থেকে রক্সের ফ্রিকিক ফিস্ট করে নিশ্চিত গোলের হাত থেকে দলকে রক্ষা করেছেন মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষক লিটন। শেষ পর্যন্ত ব্যবধানটা আর বাড়ে কমেনি।
মুক্তিযোদ্ধার বিদেশিরাই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শেখ রাসেলের কোচ মারুফুল হক। তিনি বলেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার বিদেশিরাই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে। আমাদের হাইতির নতুন ফুটবলার প্যাসকেল এ ম্যাচে খেলতে পারেনি। পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে ক্লিনিকে ভর্তি রয়েছে সে। টানা ৩ ম্যাচে সেরা একাদশ গড়তে পারিনি দলের কয়েকজন প্লেয়ার চোটগ্রস্ত থাকায়। এ ম্যাচে আবার কুঁচকির ইনজুরিতে পড়েছে হাসান আল মামুন।’
অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধার কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক বলেছেন, ‘গত ম্যাচগুলোতে আমাদের সমস্যা হচ্ছিল গোল স্কোরিংয়ে। এটা কেটে গেছে, তাই জয় সম্ভব হয়েছে। তবে খেলার শেষদিকে রাসেল আমাদের ওপর অনেক চাপ সৃষ্টি করেছে, তাই কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলাম।’
প্রায় দেড় বছর পর গোলের দেখা পাওয়া মুক্তিযোদ্ধার ফরোয়ার্ড এনামুল বলেছেন, ‘গোল করে নিজেকে নির্ভার, ভারমুক্ত ও আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে। কোচ আমাকে শুরু থেকেই বলেছিলেন একটু পেছনে নেমে স্বাধীনভাবে খেলতে। নতুন ভূমিকায় মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছি।’
(দ্য রিপোর্ট/ওআইসি/সিজি/আরকে/জানুয়ারি ২১, ২০১৪)