দিরিপোর্ট২৪ ডেস্ক : রোদেলা দুপুরে হাস্যোজ্জ্বল মুখে খেলতে নামা ক্রিকেটারদের পারফর্ম ছিল দারুণ। ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে বোলারদের অবদানও ছিল চোখে পড়ার মতো। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রশংসামূলক ব্যাকগুলোর দাবিদার বাংলাদেশ। কারণ অতিথি নিউজিল্যান্ডকে ৪০ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতেছে টাইগাররা।

মিরপুর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জয়ের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। দলীয় ৪৫ রানের মধ্যে কিউইদের তিন উইকেট তুলে নেয় স্বাগতিক বোলাররা।

উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হামিশ রুথারফোর্ডকে (১) বোল্ড করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ১৩ ওভারে সোহাগ গাজীর কাছে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ডেভসিচ (১৯। পরের ওভারে আব্দুর রাজ্জাক আউট করেন গ্রেন্ট ইলিয়টকে (১৪)।

তিন উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেট জুটিতে রস টেলরের সঙ্গে যোগ দেন কোরি অ্যান্ডারসন। এই জুটিতে ধাক্কা সামাল দেয় নিউজিল্যান্ড। স্বাগতিক বোলারদের ভালোভাবে মোকাবেলা করে তারা। ক্রমেই বাংলাদেশের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে এই জুটি। ঠিক সময়ে ঠিক কাজটি করে জুটি গুঁড়িয়ে দেন মাশরাফি।

অ্যান্ডারসনকে আউট করে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন পেসার মাশরাফি। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৩৭ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এলেও চিন্তিত মুখে উইকেটের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের সাজঘরে ফেরার দৃশ্য দেখছিলেন রস টেলর। তার প্রতি সহানুভূতি থাকলেও উইকেট শিকারে কার্পণ্য করেনি টাইগার বাহিনী।

একে একে আউট হন নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (১৪), লাথান (০), নিশাম (৮)। ম্যাককালামকে মমিনুল হক ও নিশামকে ফেরান সোহাগ গাজী। রানআউট হন লাথান। তবে দীর্ঘসময় অভিজ্ঞ টেলরকে মাঠে স্থায়ী হতে দেননি বোলাররা।

সতীর্থরা সাজঘরে ফিরলেও একাই লড়ে যাচ্ছিলেন টেলর। কিউইদের বিপদজ্জনক এই ব্যাটসম্যানকে শেষপর্যন্ত প্যাভিলিয়নের পথ দেখাতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। সোহাগ গাজীর বলে আউট হন টেলর (৪৫)।

টেলরের বিদায়ের পর সিরিজ জয়ের উৎসবের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে বাংলাদেশ। যদিও লেজের দিকের ব্যাটসম্যানরা টাইগারদের আনন্দ উদযাপনে কিছুটা বিঘ্ন ঘটায়। শেষপর্যন্ত অল উইকেটে ২০৭ রান করে কিউইরা।

সিরিজ জয়ের উৎসব শুরু করে বাংলাদেশ।

এর আগে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ শুরুর পর তাতে ভাঙন ধরান নাথান ম্যাককালাম। এই জুটিতে ৬৩ রান আসার পর ম্যাককালাম আউট করেন ক্যারিয়ারে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলা শামসুর রহমানকে (২৫)।

দ্বিতীয় উইকেটে তামিমের সঙ্গে জুটি গড়েন মমিনুল হক। জুটি ভাঙেন অ্যান্ডারসন। ব্যক্তিগত ৩১ রানে অ্যান্ডারসনের বলে আউট হন মমিনুল।

মনিনুলের বিদায়ের পর প্রথম ওয়ানডের মতো বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যায়নি। ক্যারিয়ারের ২৫তম অর্ধশতক পূর্ণ করে অ্যান্ডারসনের বলে বোল্ড হন তামিম (৫৮। এই হাফসেঞ্চুরির মাধ্যমে সাকিবের সমান সংখ্যক হাফসেঞ্চুরি করে সাবেক অধিনায়কের রেকর্ড স্পর্শ করলেন তিনি। সঙ্গে একটি রেকর্ড গড়েন তামিম। ওযানডেতে দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক হন তিনি। ১২৪ ম্যাচ খেলে ৩৭০২ রান করেন তিনি।

তামিম অর্ধশতক পেলেও জ্বলে উঠতে পারেননি আগের ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করা মুশফিকুর রহিম ও নাঈম ইসলাম। মুশফিককে (৩১) নিশাম ও নাঈম ইসলামকে (১৬) সাজঘরে ফেরান মিলস। দুজনই ক্যাচ আউট হন।

শেষপর্যন্ত নাসির হোসেন (৩), মাহমুদউল্লাহ (২১) ও সোহাগ গাজীর ২৬ রানের সুবাদে অলউইকেট হারিয়ে ২৪৭ রান করে বাংলাদেশ।

তিন বছর আগে দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। এবার তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ২-০ তে জিতে সে পথেই এগিয়ে যাচ্ছে মুশফিকুর রহিমের দল।

স্কোর:

বাংলাদেশ: ২৪৭ (তামিম ৫৮, মমিনুল ৩১, মুশফিক ৩১, সোহাগ ২৬, শামসুর ২৫, মাহমুদউল্লাহ ২১; অ্যান্ডারসন ৪/৪০, নিশাম ৪/৫৩)

নিউজিল্যান্ড: (টেলর ৪৫, অ্যান্ডারসন ৩৭, ডেভসিচ ১৯, নাথান ২৫, ম্যাককালাম ১৪; সোহাগ ৩/৩৪, মাশরাফি ৩/৪৩)

ফল: ৪০ রানে জয়ী বাংলাদেশ

(দিরিপোর্ট২৪/সিজি/এমডি/এইচএসএম/অক্টোবর ৩১, ৩০১৩)