সুখময় জীবন-যাপনে পিকে শাকিরা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ‘আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার ঘর/মনেরও গভীরে’ রবিঠাকুরের এই গান শুনছেন সময়ের বিশ্বসেরা হার্টথ্রুব গায়িকা শাকিরা; সেই গানের অমৃত চয়নে ধ্যানমজ্ঞ ফুটবলতারকা জেরার পিকে। হেলেদুলে নাচছেন তাদের এক বছরের প্রিয়মুখ আত্মজ মিলান। পাঠক হিসেবে মনে মনে এমন দৃশ্যের কথা কল্পনা করলেও বেশি হবে না। কারণ শাকিরা-পিকের সুখময় দাম্পত্যজীবনই কাটাচ্ছেন। আর তা নিয়ে ঈর্ষাকাতর-নিন্দুকদের মুখ নিশপিশ করছে; রহস্য খুঁজে বেড়াচ্ছেন সুখের সংসারের। কোনো গোল বাঁধছে না; তা নিয়েই রাজ্যের আফসোস। অথচ বার্সার ফুটবলস্টার পিকে নির্বিঘ্নে বলেছেন, ‘আমরা দু’জনেই সবকিছু খুব স্বাভাবিকভাবে নিই৷ এবং সমস্যা হলে তা সহজেই মিটিয়েও ফেলতে পারি৷ ফলে আমাদের সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে। তবে এটা সত্য আমাদের জীবনে গত ৪ বছরে কোনও সমস্যা হয়নি এমন নয়।’
শাকিরা-পিকে দম্পতিকে এক সময়ে তুলনা হয়েছে ভিক্টোরিয়া-বেকহ্যাম জুটি নিয়ে। কিন্তু এবার তাদেরও পিছনে ফেলে দিয়ে বিশ্ব ক্রীড়া সেরা দম্পতি জুটি জেরার পিকে ও শাকিরা৷ সাক্ষী বিশ্বখ্যাত ফোর্বস। সম্প্রতি তারা প্রকাশ করেছে বিশ্বের সেরা দম্পতি জুটির এক তালিকা৷ তাতেই সংযোজিত হয়েছে বার্সার স্টপার পিকে ও কলম্বিয়ার পপ তারকা শাকিরার নাম৷ অথচ পশ-বেকসের নাম এবার এখানে নেই৷ আসলে বেকস-পশের প্রাচুর্য ও গ্ল্যামারময় জীবনের পাশে পিকে-শাকিরার সাধারণ জীবনই তাদের দাম্পত্য জীবনকে আসাধারণ মাত্রা এনে দিয়েছে৷
৩৬ বছরের শাকিরার জন্ম ২ ফেব্রুয়ারি; ২৬ বছরের পিকের ১। আর তাদের জুটি জমে গিয়েছে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে তাদের ছেলে মিলান হওয়ার পরে৷ পিকে বলেছেন, ‘যখন কোনও ম্যাচে হেরে যাই, তখনই মনে হয় বুঝি সব শেষ হয়ে গেল৷ আগে এ নিয়ে হতাশা তৈরি হত৷ কষ্ট পেতাম৷ কিন্তু মিলান আমাদের জীবনে আসার পর পুরো ব্যাপারটাই বদলে গিয়েছে।’ যোগ করেছেন, ‘মিলান পৃথিবীতে নতুন এসেছে৷ ওর নিষ্পাপ মুখের হাসি দেখলেই সব জ্বালা জুড়িয়ে যায়।’
২০১০ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ শুরুর আগেই কলম্বিয়ার পপ গায়িকা শাকিরা খবরের শিরোনামে৷ কারণ তিনি বিশ্বকাপের থিম সং গাওয়ার দায়িত্ব পেয়েছিলেন৷ আর তার গান 'ওয়াকা-ওয়াকা' বাজারে আসতেই সুপার-ডুপার হিট৷ বহু গান গেয়েছেন, তার বহু অ্যালবাম জিতেছে দেশ-বিদেশের পুরস্কার৷ কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় গাওয়া ‘ওয়াকা-ওয়াকা’ গানের পর তার জীবনে জুটল স্পেনের তারকা ফুটবলার জেরার পিকের বন্ধুত্ব৷ সময়ের ডানায় তা গড়িয়েছে প্রণয়ে।
পিকে পারিবারিক জীবন সম্পর্কে বলেছেন, ‘অত্যন্ত সাধারণ জীবন কাটাই আমরা৷ এক সঙ্গে কখনও মুভি দেখি৷ সময় পেলেই একসঙ্গে ডিনার করি৷ আর দুজনেই এখন অবসর সময় কাটাই মিলানকে নিয়ে৷ ও এখন টলমল পায়ে হাঁটতে শিখেছে৷ এটা দেখা বড় আনন্দের, সৌভাগ্যের৷ ওর হাসিই আমাদের জীবন ভরিয়ে দিয়েছে।’
ফুটবল বিশ্বে শাকিরার ভক্ত কত; হিসেব করে বলা মুশকিল। খুল্লাম-খুল্লা পোশাকে কোমড়ে ঢেউ তুলে মাতাচ্ছেন কোটি কোটি দর্শক। অন্যদিকে বার্সাস্টার পিকেও কম যান না। দুর্দান্ত পারফর্মে মাঠে বল নিয়ে ছুটছেন পিকে; চারিদেক গগণবিদারী উল্লাস। উন্মাদনায় আছড়ে পড়ছে গ্যালারি। এক কথায় ভিন্ন আঙিনায় ২ জনই দর্শকদের মন-আসনের মনিকোঠায় ঠাঁই করে নিয়েছেন। পিকে-শাকিরা স্নায়ু-উত্তেজক আবহে থেকেও পারিবারিক সুন্দরের পথে ছুটছেন অবিরাম। গড়ছেন স্বপ্নময় জীবনের অভিযাত্রা। যেখানে নিজের নাক কেটে; অপরের যাত্রা ভঙ্গকারীদের হ্যাপিত্তেশ-আফসোস হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
(দ্য রিপোর্ট/এএস/ওআইসি/সিজি/জানুয়ারি ২১, ২০১৪)