মঞ্জুর হত্যা মামলার রায় ১০ ফেব্রুয়ারি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দফায় দফায় পিছিয়ে যাওয়া মঞ্জু হত্যা মামলার রায় ১০ ফেব্রুয়ারি ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়েছে। সরকার ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বুধবার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা আক্তার রায়ের এই দিন ঠিক করে রায় দেন।
মামলার প্রধান আসামি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ অন্য দুই আসামি মেজর (অব.) কাজী এমদাদুল হক ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূইয়াও এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার অন্য আরও দুই আসামি মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল লতিফ ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শামসুর রহমান শামসের বিরুদ্ধে এ মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।
যুক্তিতর্কের শুনানিতে উপস্থিত হতে সরকারি প্রটোকল ও পতাকাবাহী গাড়িতে চড়ে বেলা ১১টার দিকে আদালতে আসেন এরশাদ। এ সময় এরশাদের সঙ্গে ছিলেন ছোট ভাই জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য জি এম কাদের, যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক ও নুরুল ইসলাম নুরু প্রমুখ।
এ মামলার পাঁচ আসামিই উচ্চ আদালতের জামিনে রয়েছেন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাশে প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের (অস্থায়ী) এজলাসে এই বিচারের কার্যক্রম চলে।
১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় চট্টগ্রামে একদল সৈন্যের গুলিতে নিহত হন জিয়াউর রহমান। ওই ঘটনার পর পুলিশের হাতে আটক হন জেনারেল মঞ্জুর। পুলিশ হেফাজত থেকে ১ জুন চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নেওয়ার পর তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর ১৪ বছর পর ১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন মঞ্জুরের ভাই। ওই বছরই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তখনকার সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ অভিযোগপত্র দেন এবং বিচার শুরু করে আদালত।
তবে সরকার বদল এবং দফায় দফায় রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আবেদনে মামলার বিচার কাজ শেষ পর্যায়ে আসতে লেগে যায় ১৮ বছর।
মামলার শুনানির সময় আত্মপক্ষ সমর্থনে এরশাদ বলেন, জেনারেল মঞ্জুরকে জীবিত অথবা মৃত ধরিয়ে দেওয়ার জন্য তৎকালীন সরকার রেডিও ও টিভিতে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। তবে ওই ঘটনার সঙ্গে তার কোনও সম্পৃক্ততা ছিল না। ধরা পড়ার পর মেজর মঞ্জুরকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে আনার পথে বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং পরে নিরাপত্তা প্রহরীর সঙ্গে গুলি বিনিময় হয়। একপর্যায়ে আবুল মঞ্জুর গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
তখনকার স্বরাষ্ট্র সচিব মাহবুবুজ্জামান এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, তখনকার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের নির্দেশে পুলিশ মঞ্জুরকে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। ২০১২ সালের ২ অক্টোবর নাজিমউদ্দিন রোডের বিশেষ এজলাসে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজের কাছে আত্মপক্ষ সমর্থন করে লিখিত বক্তব্য দাখিল করেন এরশাদ। মামলার অপর আসামি অবসরপ্রাপ্ত মেজর কাজী এমদাদুল হকও আদালতে লিখিত বক্তব্য দেন। পরে মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২২ নভেম্বর। ২২ নভেম্বর রায় না দিয়ে আদালত অধিকতর শুনানির জন্য ২২ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দসহ রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয় এ মামলায়। তখনকার সেনাপ্রধান আবু সালেহ মো. নাসিম এবং তৎকালীন মহানগর হাকিম আবুল হাসেমও ছিলেন সাক্ষীদের মধ্যে।
দ্য রিপোর্ট/সাআ/এমএআর/জানুয়ারি ২২, ২০১৪)