দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ২০০১ সালে সংখ্যালঘু ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনার তদন্তে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাইকোর্টে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে ওই প্রতিবেদন কেন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র সচিবকে দুই সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে এডভোকেট মনজিল মোরসেদের করা এক আবেদনে বুধবার এ আদেশ দেওয়া হয়।

২০০৯ সালে করা এক রিট আবেদনের সূত্র ধরে এ আবেদন করা হয় বলে জানান এডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

২০০১ সালের ১ অক্টোবর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন করা হয়। সে সময় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপরও নির্যাতন করা হয়। ওই নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এইচআরপিবি হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করে। ওই রিট আবেদনে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমদের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এক রায় দেন।

ওই সময় রায়ে নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ওই কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের ওই নির্দেশের পর সরকার সাবেক জেলা জজ মো. শাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি প্রায় এক বছর তদন্ত শেষে এক হাজার পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনে দোষীদের চিহ্নিত করা এবং নির্যাতন প্রতিরোধে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়। কিন্তু সরকার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি বা আদালতেও দাখিল করেনি।

এ অবস্থায় বুধবার ওই প্রতিবেদনের বিষয়টি প্রকাশের জন্য আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ। তিনি আদালতে বলেন, ২০০১ সালে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে যে সহিংসতা হয়েছিল সে বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এবং ওই নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের যথাযথ আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে ২০১৪ সালে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সংঘটিত সহিংসতা ঘটনার পুনরাবৃত্তি হত না।

তিনি বলেন, তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশিত না হওয়ায় এবং প্রতিবেদনের কপি আমাদের না দেওয়ায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারিনি। ২০০৯ সালে যে রিট আবেদনটি করা হয়, তা চলমান (ম্যানডামাস) হিসেবে রেখে দেন আদালত। এ কারণেই ওই রিট আবেদনের সূত্র ধরে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এমএআর/সা/জানুয়ারি ২২, ২০১৪)