দ্য রিপোর্ট, প্রতিবেদক : অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তফা কামালকে জামিন দিয়েছেন হাই কোর্ট। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতের দেওয়া যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশের কার্যকারিতা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

পরিবহন সংস্থা এস এ পরিবহনের মালিকের কাছে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দাবির দায়ে যাবজ্জীবন দণ্ড পান নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে জংশনের (জিআরপি) পুলিশ সুপার (এসপি) মোস্তফা কামাল।

হাই কোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বুধবার জামিন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।

আদালতে আসামির পক্ষে শুনানী করেন ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দিলুরুজ্জামান। আদেশের পরে সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দিলুরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর নিম্ন আদালত ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে চাঁদা দাবির অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ৩০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারপতি মো. মোতাহার হোসেন। ওই দিন রায় ঘোষণার পর পরই মোস্তাফা কামালকে আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

এদিকে, ৩০ লাখ টাকার মধ্যে ২৫ লাখ টাকা মামলার বাদী এস এ পরিবহনের মালিক সালাউদ্দিন আহমেদকে এবং বাকি ৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকা জমা না দিতে পারলে আসামিকে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।

এ ছাড়া দণ্ডবিধির ১৬১, ১৬৭ ও ১০৯ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মোস্তফা কামালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বাইরেও অতিরিক্ত আরও ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত।

মামলার অপর আসামি তৎকালীন মাধবপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওহেদ মিয়াকে সব অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়েছিল।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০২ সালের ২২ ডিসেম্বর এস এ পরিবহনের মালিক মো. সালাউদ্দিন আহমেদ ২০ লাখ টাকাসহ সিলেট যাওয়ার পথে মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান ও উপ-পরিদর্শক ওহেদ মিয়া আটক করেন। পরে পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল সালাউদ্দিন আহমেদকে আরও ৩০ লাখ টাকাসহ মোট ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার শর্তে মুক্তি দেওয়ার দাবি করেন।

কিন্তু সালাউদ্দিন এ টাকা দিতে অস্বীকার করায় মোস্তফা কামাল এস এ পরিবহনের মালিকের বিরুদ্ধে মাদক ও নারী পাচার আইনে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তী সময়ে মামলার বাদী ঢাকায় এসে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট করেন। আদালত ওই মামলা খারিজ করে দেন।

ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে বাদী সালাউদ্দিন আহমেদ ঘুষ দাবির অভিযোগে মোস্তফা কামাল ও ওহেদ মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোট পাঁচজন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এমএআর/সা/জানুয়ারি ২২, ২০১৪)