দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : টেস্ট ক্রিকেটকে নিয়ন্ত্রিত করতে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ভারতীয় বোর্ড একজোট হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ফিকা। ২০২০ সাল পর্যন্ত আইসিসি ফিউচার ট্যুর প্রজেক্ট (এফটিপি) চূড়ান্ত করার পরও কেন ২০১৫ সাল থেকে টেস্ট ভুক্ত দেশগুলোকে ২টি ধাপে বিভক্ত করে র‌্যাঙ্কিংয়ের নীচু সারির দলগুলোর টেস্ট খেলার অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে, তার বিরোধিতা করেছে ফিকা চেয়ারম্যান পল মার্শ।

বার্তা সংস্থা রয়াটার্সকে দেওয়া সাক্ষাতকারে আইসিসি’র আসন্ন সভায় এই ৩ বোর্ড যে প্রস্তাব উত্থাপনের জন্য এখন একজোট, সেই বিতর্কিত প্রস্তাব বাতিলের দাবি তুলেছেন। আইসিসি’র ফিন্যান্স অ্যান্ড কমার্শিয়াল এ্যফেয়ার্স কমিটির অনুমোদন পেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যালেন্ডার এবং রাজস্ব পুরোপুরি ৩ দেশের বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে বলে গভীর শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ফিকার প্রধান। এই প্রস্তাবের ছকটি তৈরি করা হয়েছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্যই। আইসিসি’র পরবর্তী সভায় অন্য ৭টি বোর্ড সদস্যকে এই প্রস্তাব বাতিল করা উচিৎ। তাদের উপর নির্ভর করছে এই খেলার ভবিষ্যত।’

একজন অস্ট্রেলিয়ান হয়েও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার এমন প্রস্তাব মেনে নিতে পারছেন না ফিকা প্রধান পল মার্শ ক্রিকেটের বিশ্বায়ন এবং বৃহত্তর স্বার্থে এই প্রস্তাব আনা হচ্ছে না। শক্তিশালী ‘বিগ থ্রি’র (৩ দেশ) স্বার্থের কথা ভেবেই এ প্রস্তাব আনা হয়েছে বলে আমরা ভয় পাচ্ছি। আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হওয়ার পরও ‘বিগ থ্রি’ আইসিসি’র আয়ের সিংহভাগ আশা করছে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজের কারণে তারা এমনিতেই আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল।’

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান ওয়ালি এডওয়ার্ডস ফিকার এই মন্তব্যে রীতিমতো হতাশ। ক্রিকইনফোকে তার সে বক্তব্যই তুলে ধরেছে আইসিসি’র কোন আলোচনার উপর মন্তব্য করতে পারি না, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এ রেওয়াজই মেনে চলেছে। তবে আমরা আজ ফিকার প্রশ্ন শুনে হতাশ। আমরা এখনো এই বিষয়টির উপর ভোট নিয়ে আলোচনা করিনি। আইসিসি কর্মকান্ডের সম্ভাব্য পরিবর্তন নিয়ে আইসিসি’র পূর্ন সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে। ’

আগামী ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি দুবাই সভায় প্রস্তাবটি উঠবে। তবে এনডিটিভি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাতকারে আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডস অবশ্য এই সংস্কার প্রক্রিয়ার জন্য সময়ের প্রয়োজন বলে মনে করছেন এটা এখন শুধুই সুপারিশ, ফিন্যান্স এবং কমার্শিয়াল এ্যফেয়ার্স কমিটি এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত সেখানে প্রতিনিধিত্ব করছে। এই প্রস্তাবটি এখন আইসিসি’র ফিন্যান্স কমিটি এবং আইসিসি’র বোর্ড সভায় আলোচনায় উঠবে। তাই এখন এই বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। আইসিসি তাই এই বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারে না। ’

২ স্তরের টেস্ট প্রবর্তন করা হলে বাতিল হবে এফটিপি। টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে সবার শেষে থাকা বাংলাদেশের উপর নেমে আসবে আইসিসি’র খড়গ। খেলতে হবে কন্টিনেন্টাল কাপে, আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ের সঙ্গে। এমন পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়ে ফুঁসে উঠেছে দ.আফ্রিকা, পাকিস্তান বোর্ড ও খুঁজছে সমর্থক। তবে এমন পরিস্থিতিতে করণীয় কি, তা নির্ধারণে আজ বিসিবি বসছে আলোচনায়। বিসিবি’র ভারপ্রাপ্ত সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন অবশ্য ‘বিগ থ্রি’র প্রস্তাবের বিরোধিতা করেননি, বিসিবি’র সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা তো ১০টি টেস্ট দেশের একটি। আইসিসি’র ওয়ার্কিং গ্রুপের পক্ষ থেকে এই পেপারস গুলো তৈরি হয়েছে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ২ দিন আগে পেপারস পেয়েছি। এখন যে প্রস্তাব এসেছে, তা নিয়ে আলোচনা করব বিসিবিতে।’

(দ্য রিপোর্ট/এএস/সিজি/জানুয়ারি ২২, ২০১৪)