চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা : বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, দেশের সীমান্ত রক্ষার কাজে বিজিবি সদস্যরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সীমান্তে মাদক পাচার ও চোরাচালান রোধে বিজিবি একাগ্রতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করছে। সীমান্তসংক্রান্ত কোনো কিছুই বিজিবি এড়িয়ে যাচ্ছে না।

চুয়াডাঙ্গা- ৬ বিজিবি ব্যাটালিয়ন কার্যালয় মিলনায়তনে বুধবার বিকাল ৫টায় চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ সব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ভারতসহ অন্য দেশের সঙ্গে সীমান্ত বিষয়ক আইন-কানুন মেনেই বিজিবি সদস্যরা তাদের উপর ন্যাস্ত দায়িত্ব পালন করছে। ভারতের অভ্যন্তরে গড়ে ওঠা মাদকের গোডাউন সরাতে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বারবার ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে অবগত করানো হচ্ছে। বিএসএফ তাদের সাধ্য মতো বাংলাদেশে মাদক পাচার রোধে সহযোগিতা করছে। ভারতের অভ্যন্তরে সীমান্তবর্তী এলাকায় রাতে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার বেশির ভাগ মানুষের এটা অজানা থাকায় তারা রাতে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেন। বিএসএফ তাদের আটক করে সেখানকার কারাগারে পাঠায়।

ভারতের চেয়ে বেশি বাংলাদেশের মানুষ অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে আটক হয় উল্লেক করে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, তাদের ছাড়িয়ে আনতে পতাকা বৈঠকের সময় বিজিবিকে জবাব দিতে গিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। বাংলাদেশের মানুষের অসচেতনার কারণে এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটছে।

তিনি বলেন, অসচেতন মানুষকে সচেতন করতে পারে সাংবাদিকরা। তাদের লেখনির মাধ্যমে এটা প্রতিরোধ করা সম্ভব। সাংবাদিকরা সংবাদ লিখেই আমাদের কাজে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। আমরা আমাদের বিষয়ে সংবাদ পড়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারছি।

বাংলাদেশের প্রত্যেকটি বিওপি আধুনিকায়ন ও বিজিবি সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এতে বিজিবি সদস্যরা আরও আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

তিনি দেশের দু-তিনটি পত্রিকার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, তারা নেতিবাচকভাবে বিজিবি সম্পর্কে লেখালেখি করছে। তাদের বোঝা উচিৎ বিজিবি তাদের উপর ন্যাস্ত দায়িত্ব ছাড়া অন্য কোনো কাজে জড়ায় না। এ ছাড়া এ কাজ করার মতো তাদের সময়ও থাকে না। তিনি সাংবাদিকদের কাছে দায়িত্বশীল সংবাদ পরিশেনের আশা করেন।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আলোচিত ‘ফেলানী হত্যাকাণ্ড’ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের বিএসএফের পক্ষ থেকে ফেলানী হত্যা মামলার রিভিউ করা হবে। পৃথিবীর কোনো দেশে সীমান্ত হত্যাকাণ্ডে অন্য দেশ থেকে সাক্ষি নেওয়া হয় না। কিন্তু আমরা আমাদের দেশ থেকে সাক্ষি পাঠাতে সক্ষম হয়েছি।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিবি আঞ্চলিক কমান্ডার (দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল) সদর দফতরের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সামছূর রহমান, বিজিবি কুষ্টিয়া সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মো. শাহরিয়ার রশীদ ও চুয়াডাঙ্গা- ৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল এস এম মনিরুজ্জামান।

(দ্য রিপোর্ট/আরআর/এমএআর/জানুয়ারি ২২, ২০১৪)