দ্য রির্পোট প্রতিবেদক : অদ্ভুত এক সমীকরণ নিয়ে এগুচ্ছে আইসিসি। যেখানে র‌্যাঙ্কিংয়ের তলানিতে থাকা দলগুলোর টেস্ট খেলা বাদ হতে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা ভারতের পক্ষে এত দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়া একাট্টা হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগামী ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি আইসিসির সভায় প্রস্তাবিত নতুন এই নীতিমালা নিয়ে নানা রকমের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা তাদের অবস্থান পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো পর্যবেক্ষকের তালিকায়ই। বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বোর্ড সভা শেষে আইসিসির সংস্কারের বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেছেন, ‘আইসিসির যে পেপার আমরা পেয়েছি তার ওপর একটা প্রেজেন্টেশন আজকে (বৃহস্পতিবার) বোর্ড সভায় দেয়া হয়েছে। এর আগে দুবাইয়ে শেষ সভায় আমরা একটি ধারণা পেয়েছি। কিন্তু এবার বেশ বিস্তারিত ছিল ওই প্রস্তাবগুলো। সব মিলিয়ে এ বিষয়টা আমার কঠিনই মনে হচ্ছে।’

নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, ‘অনেক প্রশ্নের উত্তর এখানে নেই। কী করলে কী হবে তার অনেক উত্তরই এখানে নেই। এই প্রশ্নগুলো আমাদের করা দরকার এবং উত্তরগুলো পাওয়া দরকার। আমরা ভেবে দেখেছি আমাদের কোনো মনোভাবই এখন প্রকাশ করা ঠিক হবে না। অন্য দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের কথা বলে দেখতে হবে তারা কী ভাবছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি আজ (বৃহস্পতিবার) থেকেই এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ শুরু করব।’

অন্য দেশগুলো যেখানে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে; সেখানে বাংলাদেশ কেন করবে না- সাংবাদিকদের করা এমন প্রশ্নের উত্তরে বিসিবির সভাপতি বলেছেন, ‘আমরা গণমাধ্যমে দেখেছি দক্ষিণ আফ্রিকা এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলেছে কিন্তু ওদের বোর্ডের অবস্থান এখনো জানি না। ওই দিন সভাতে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, সেখানে পাকিস্তান ছাড়া কেউ প্রতিবাদ করেনি।’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘বাইরে কে কী বলল তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সভায় কী বলা হল তাই আমাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে আমি একটু আগেই যাব দুবাইতে। আগে গিয়ে যারা আছে তাদের সঙ্গে কথা বলা দরকার। যারা এটি পরিকল্পনা করেছে তাদের সঙ্গেও কথা বলা দরকার । ব্যাখ্যার জন্য। এর ফলে ২৮ তারিখের সভায় আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরতে পারব।’

সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত কী হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘আমরা পরিস্থিতি বুঝেই সিদ্ধান্ত নিব। অন্যদেশগুলোর কী ভাবছে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করতে হচ্ছে। অবস্থা বুঝেই আমরা আপাতত ঠিক করেছি ওখানে গিয়েই আমাদের সিদ্ধান্ত নেব। লম্বা আলোচনা হয়েছে। এটা বেশ টেকনিক্যাল এবং ক্রিটিক্যাল এবং বিষয়টি এত সহজ নয়। প্রস্তাবের আরও ডিটেইল জানতে হবে।’

একটি বিষয় সম্পর্কে সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিসিবির সভাপতি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে জিম্বাবুয়েরও অনেক চিন্তা-ভাবনা করা দরকার বলে আমার মনে হয়। ওরা কোনো অবজেকশন জানায়নি এখনো। পরের সভায় তারা কী করে দেখা দরকার, তাদের সাথে কথা বলা দরকার। আমাদের দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা করবে হবে। তবে এটা ভুলে গেলেও চলবে না। ইংল্যান্ড ৮ বছরে আমাদের সঙ্গে ১ বার টেস্ট ম্যাচ খেলবে না। অস্ট্রেলিয়া খেলে না। আমরা খেলাতে পারিনি। আমাদের খেলতে হবে। এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আমার ধারণা, এই ধরনের প্রোপোজাল তিনটি শক্তিশালী দেশ হোমওয়ার্ক করেই করেছে। ওরা হোমওয়ার্ক কীভাবে করল কারা কারা এর সঙ্গে একমত না জেনে কথা বলতে যাওয়াও রিস্কি।’

আইসিসির সভায় এ বিষয় নিয়ে বিরোধিতা করলে শ্রীলংকা সফর, এশিয়া কাপ ও টোয়েন্টি২০ বিশ্বকাপ আয়োজনে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘আমরা বিরোধিতা করলে শ্রীলংকার সফর, এশিয়া কাপ ও টোয়েন্টি২০ বিশ্বকাপে কোনো প্রভাব পড়বে না। এর সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই। কোনো সম্পর্ক থাকাও সম্ভব নয়।’

(দ্য রিপোর্ট/রই/আসো/ওআইসি/সা/জানুয়ারি ২৩, ২০১৪)