ইজতেমা ও তাবলীগ বিষয়ে তথ্যকণিকা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : আজ ২৪ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার প্রথমপর্ব শুরু হচ্ছে। ইজতেমা ও তাবলীগ বিষয়ে পাঠকের নানা জিজ্ঞাসা রয়েছে। সেই সব জিজ্ঞাসার উত্তর ও তাবলীগ জামাতের বিভিন্ন পরিভাষা সম্পর্কে তথ্য কণিকা এখানে ইন্টারনেটের সহযোগিতায় সন্নিবেশ করা হয়েছে।
** পৃথিবীর কোন দেশে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়?
বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।
** বিশ্ব ইজতেমার মূল উদ্দেশ্য কি?
বিশ্ব ইজতেমার মূল উদ্দেশ্য হল ধর্মীয় কাজের জন্য মুসলমানদিগকে একত্রিত করা।
** ইজতেমা শব্দটি কোন ভাষা?
ইজতেমা শব্দটি আরবী ভাষা।
** ইজতেমা বলতে কি বুঝায়?
ইজতেমা বলতে ধর্মীয় কাজে একত্রিত বা সমবেত হওয়াকে বুঝায়।
** বিশ্ব ইজতেমার দায়িত্ব ও কর্তব্য কি ?
বিশ্বের আলেম-ওলামাদের কাছ থেকে কুরআন-হাদিসের বয়ান শোনা ও তা বিশ্বের দরবারে পৌঁছিয়ে দেওয়া।
** তাবলীগ শব্দের অর্থ কি?
তাবলীগ শব্দের অর্থ হল প্রচার বা প্রসার।
** তাবলীগ বলতে কি বুঝায় ?
তাবলীগ বলতে ইসলাম ধর্মের কর্মকাণ্ডের প্রচার ও প্রসারকেই বুঝায়।
** চিল্লা বলতে কি বুঝায়?
চিল্লা বলতে ১৪/১৫ জন মুবাল্লিগ ঈমান ও আমলের কাজে ৪০ দিন যে কোন মসজিদে ইবাদতে মগ্ন থাকাকে বুঝায়।
** একটি চিল্লায় কত জন মুবাল্লিগ অংশ নেয়?
একটি চিল্লায় ১৪ থেকে ১৫ জন এর মত মুবাল্লিগ অংশ নেয়।
** এক চিল্লা কত দিনে হয় ?
এক চিল্লা ৪০ দিনে হয়।
** চিল্লাদানকারীরা কি কাজে নিয়োজিত থাকেন ?
চিল্লাদানকারীরা বিশ্বাবাসীর নিকট তাওহীদ, রিসালাত, আখেরাতসহ ইমান আমলের দাওয়াতের কাজে নিয়োজিত থাকেন।
** আখেরী মোনাজাতের উদ্দেশ্য কি?
আখেরী মোনাজাতের উদ্দেশ্য হলো নিজ, পরিবার, দেশ, জাতি ও বিশ্ব শান্তির জন্য বিশেষভাবে দোআ করা।
** তাবলীগ জামাতের ১ম উদ্যোক্তা মুরব্বী কে ?
তাবলীগ জামাতের প্রথম উদ্যোক্তা মাও. মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্দলবী (র.)।
** মাও. মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্দলবীর (র.)-র জন্মস্থান কোথায়?
মাও. মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্দলবীর (র.)-র জন্মস্থান ভারতের দিল্লীতে।
** তাবলীগ জামাতের ১ম সূচনা হয় কোন্ দেশে?
তাবলীগ জামাতের ১ম সূচনা হয় ভারতের দিল্লীতে।
** মাও. মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্দলবী (র.) কত সাল হতে এই মহতি কাজের দাওয়াতি কাজ শুরু করেন।
মাও. মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্দলবী (র.) হিজরী ১৩৪৫ সন হতে এই মহতি কাজের দাওয়াত শুরু করেন।
** মাও. মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্দলবী (র.) কত সালে ইন্তেকাল করেন?
মাও. মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্দলবী (র.) ১৯৪৪ ইংরেজী সনে ইন্তেকাল করেন।
** বাংলাদেশে কত সাল হতে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ?
বাংলাদেশে ১৯৪৬ সাল হতে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ।
** সর্ব প্রথম বাংলাদেশের কোথায় বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়?
সর্ব প্রথম ঢাকার কাকরাইলস্থ প্রাচীন তাবলীগ মসজিদে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৬ সালে।
** বাংলাদেশ ২য় বিশ্ব ইজতেমা কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?
বাংলাদেশ ২য় বিশ্ব ইজতেমা চট্টগ্রামের হাজী ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৮ সালে।
** বাংলাদেশে ৩য় বিশ্ব ইজতেমা কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?
বাংলাদেশে ৩য় বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় নারায়ণগঞ্জের সিদ্দিরগঞ্জে ১৯৫৮ সালে।
** ১৯৬৬ সনে বিশ্ব ইজতেমায় কতজন মুসল্লী অংশগ্রহণ করেছিল?
১৯৬৬ সনে বিশ্ব ইজতেমায় ৪৫০০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করেছিল।
** ১৯৬৬ সালে মুসল্লীদের পানির জন্য কতটি হস্তচালিত নলকূপ বসানো হয়েছিল ?
১৯৬৬ সালে মুসল্লীদের পানির জন্যমাত্র ১০টি হস্তচালিত নলকূপ বসানো হয়েছিল।
** বর্তমানে ইজতেমা ময়দানে অঢেল পানি সরবরাহের উৎস কি?
৪টির অধিক বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপ।
** বর্তমানে বিশ্বে কতটি জামাত তাবলীগ জামাতে মেহেনত করে যাচ্ছে?
প্রায় ২০০ শতের অধিক জামাত।
** বর্হিঃবিশ্বে কতটি দেশ তাবলীগ জামাতে মেহেনত করে যাচ্ছে?
প্রায় ১১২টি দেশ।
** বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের সদর দপ্তর কোথায়?
বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের সদর দপ্তর ঢাকা শহরের কাকরাইলস্থ তাবলীগ মসজিদে।
** বিশ্ব ইজতেমায় মুসলীম মুসল্লী ছাড়া অন্য কোন ধর্মের লোকেরা অংশগ্রহণ করে?
হ্যাঁ, প্রায় ২শত সনাতন ধর্মের লোকেরা অংশ গ্রহণ করে থাকে (জরিপ অনুযায়ী)।
** তাবলীগ জামাতে কি কি পরিভাষা ব্যবহার করা হয়?
তাসকিল, জুড়নেওয়ালে জামাত, গাশ্ত, চিল্লা, সাল, তালিম, বয়ান, এলান, আমির, মেহনত, জিম্মাদার, জামাত, সাথী, মামুর, মোতাকাল্লেম, হযরতজী, উসুলি ইত্যাদি।
** ঢাকা শহরে কাকরাইলস্থ তাবলীগ মসজিদের অপর নাম কি?
জিন্দা মসজিদ।
** কাকরাইল মসজিদকে জিন্দা মসজিদ বলা হয় কেন?
প্রায় ৪০ বছর যাবৎ এই মসজিদের কোন তালা-চাবি নেই, সর্বক্ষণিক মুসল্লীরা আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকে। যার ফলে দরজা বন্ধের প্রয়োজন হয় না বলেই সর্বদা জিন্দা।
** বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লী কারা?
বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লী সমগ্র বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা।
** বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লীদের পার্থক্য কিরূপ?
কোন পার্থক্য বা ভেদাভেদ নেই, আমির ফকির সকলেই এখানে সমান সমান।
** বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীদের সহজ-সরল খাবার কি?
সাধারণত ডাল খিচুড়ি।
** বিশ্ব ইজতেমায় পত্রে কাওকে দাওয়াত দেয়া হয় কি না?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় সরকার প্রধান কাওকেই দাওয়াত দিতে হয় না, ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লাহ্র দাওয়াতে সকলে নিজ নিজ দায়িত্ব অংশগ্রহণ করে থাকেন।
** বিশ্ব ইজতেমায় মোনাজাতের নির্দিষ্ট সময় কখন?
সকাল ১০টা হতে জোহরের আগে পর্যন্ত।
** বিশ্ব ইজতেমায় আগত অধিক সংখ্যক বিদেশী মেহমান কোন্ দেশের?
পাকিস্তানের।
** বিশ্ব ইজতেমায় প্যান্ডেল নির্মাণের শ্রমিক কারা এবং কত দিন পর্যন্ত সময় লাগে?
ধর্মপ্রাণ সকল শ্রেণির স্বেচ্ছা শ্রমিক প্রায় ৩ মাসের অধিক সময় লাগে।
** বিশ্ব ইজতেমায় অর্থ যোগানদারী কারা?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশী-বিদেশী ধর্মপ্রাণ বিত্তশালীরা।
** বিশ্ব ইজতেমা আমাদেরকে কি শিক্ষা দেয়?
বাদশা, আমীর, ফকির সকলেই সমান, সকলেই আল্লাহর বান্দা।
(দ্য রিপোর্ট/একেএম/জানুয়ারি ২৪, ২০১৪)