দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, আজকে নাকি খালেদা জিয়া উপজেলা নির্বাচনে আসবেন। তা হলে কেন এতগুলো মানুষ হত্যা করা হল। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব মেনেই নির্বাচনে আসতে হবে। এ ছাড়া তাদের (বিএনপি) আর কোনো উপায় নেই। নির্বাচনে আসার জন্য আমরা তাদের আহ্বানও জানাব। একই সঙ্গে মানুষ হত্যার জবাব দিতে হবে তাদের। নাকে খত দিয়ে থুতু চেটে খেয়ে নির্বাচনে আসতে হচ্ছে, এ ছাড়া তাদের কোনো উপায় নেই।

রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ মিলনায়তনে শুক্রবার দুপুরে আইডিইবির দুই দিনব্যাপী প্রতিনিধি সম্মেলন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, শেখ হাসিনা যে গণতান্ত্রিক পথে ছিলেন এটি তার প্রমাণ। আজকে তাদের উপায় নেই, শেখ হাসিনার সরকার মানা ছাড়া তাদের কোনো উপায় নেই। এটি তাদের বিশ্বাস করতে হবে। এ দেশে রাজনীতি করতে হলে নাকে খত দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সরকার আছে, তার অধীনেই নির্বাচনে আসতে হবে। এটা তারা বুঝতে পেরেই নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তিনি বলেন, আজকে তারা কোনো অজুহাতে তত্ত্বাবধায়কের দাবি করলেন? বিগত দিনের সরকারের সময় যেভাবে কারচুপির নির্বাচন হয়েছিল এই সরকারের সময় এ ধরনের কারচুপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এ সরকার কোনো নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেনি।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের আমলে কারচুপির নির্বাচন ও হোন্ডা-গুণ্ডার নির্বাচন হয়েছিল। তার কারণ ১৯৭২ সালে সংবিধানে সামরিক শাসন জারি করার সুযোগ ছিল না। তিনি সামরিক শাসন জারি করে রাজনৈতিক দল গঠন করে কারচুপির নির্বাচন করেন। তারপর এরশাদের আমলেও এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

বিরোধী দলের আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল নতুন পাকিস্তান সৃষ্টি। এই দেশকে পাকিস্তান-আফগানিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে।

প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আমরা যখন পাকিস্তানের মধ্যে ছিলাম তখন পাকিস্তানে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া কম ছিল। আমরা দেশ স্বাধীন করলাম। কেননা, ১৯৭০ সালে নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক রায় পেয়েছিলেন। তা ছিল ৬ দফারভিত্তিতে শাসনতন্ত্র রচনা। সে সময় তারা (পাকিস্তানী শাসকরা) সংসদের অধিবেশন বন্ধ করে দেয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী শুধু বিএনপি নেত্রীই ছিলেন না তিনি জামায়াতের আমিরও হয়েছিলেন। যখন সংবিধানের সংশোধনী করলাম আমরা তাদের ডাকলাম আলোচনায় আসতে, তারা আসলেন না। যখন নির্বাচন ঘনিয়ে এলো বিএনপি সুনিশ্চিত পরাজয় জেনেই ইলেকশন বয়কট করল।

বিরোধী দলের নির্বাচনে না আসার ঘটনাকে ফুটবল খেলার সঙ্গে তুলনা করে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফুটবল খেলায় এক দল না এলে পাঁচ মিনিট পর রেফারি হুইসেল বাজিয়ে অন্য দলকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। বিরোধী দল নির্বাচনে না আসায় আমরা সেভাবে জয়ী হয়েছি। তারা নির্বাচনে না এলে আমরা তো নির্বাচনে জয়লাভ করবই।

এর আগে সকাল সোয়া ১১টায় ‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা, আমাদেরই বসুন্ধরা’ গানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন আইডিইবির পেশ ইমাম। এরপর প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। ফুল দিয়ে বরণ করার পর আইডিইবির ঐতিহ্য অনুযায়ী অতিথিদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত ও মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান। অনুষ্ঠানে আইডিইবির সভাপতি একেএমএ হামিদ সভাপতিত্ব করেন।

(দ্য রিপোর্ট/এইউএ/এমডি/আরকে/সা/জানুয়ারি ২৪, ২০১৪)