‘বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নির্বিঘ্ন করতে হবে’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, নব্য বাকশালী চেতনার জগদ্দল পাথরকে অপসারণ করার লক্ষ্যে জনগণ আজ দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। আবারও কঠিন লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ভোটবিহীন নির্বাচনে জবরদখলকারী গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে পরাভূত করে আমাদের রক্তস্নাত বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলাকে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে হবে।
বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি স্বাক্ষরিত এক বার্তায় শুক্রবার বিকেলে এ সব কথা জানা যায়।
বার্তায় খালেদা জিয়া বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তাদের (আওয়ামী লীগ) বিপদ টের পেয়ে তারা সংবিধান থেকে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে জনগণের ভোটের অধিকারকেও হরণ করেছে।
‘তামাশার নির্বাচনের মাধ্যমে এখন একক কর্তৃত্ববাদী শাসন দীর্ঘায়িত করার অলীক স্বপ্নে বিভোর হয়ে দেশের ঐক্য, সংহতি ও সার্বভৌমত্বকে সংকটাপন্ন করে তুলতেও দ্বিধা করছে না। বর্তমান সরকার বিরোধী দলের প্রতি আচরণে কখনোই সভ্য রীতি-নীতি অনুসরণ করেনি।’
‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে খালেদা জিয়া বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার লক্ষ্যে বহুদলীয় গণতন্ত্র গলাটিপে হত্যা করে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা ‘বাকশাল’ কায়েম করে। তারা জাতীয় সংসদে বিরোধী মতামতকে উপেক্ষা করে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুন্ঠিত করে একপ্রকার গায়ের জোরেই এক অগণতান্ত্রিক মধ্যযুগীয় আইন পাস করে।
তিনি বলেন, একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী মানুষের বাক-ব্যক্তি, চলাচল ও সমাবেশের স্বাধীনতাসহ সকল মৌলিক অধিকার হরণ করে, সব সংবাদপত্র বন্ধ করে শুধু তাদের সমর্থক চারটি প্রকাশনা চালু রাখার ফরমান জারি করে। এর ফলে চিরায়ত গণতন্ত্রের প্রাণ শক্তিকেই তারা সে দিন নিঃশেষ করে দেয়। দেশবাসীর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফলে অর্জিত মানুষের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে তারা ভূলুন্ঠিত করে সমাজে এক ভয়াবহ নৈরাজ্যের অমানিশা ছড়িয়ে দেয়।
‘এমনি এক দুঃসময়ে ‘৭৫-এর ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার সম্মিলিত স্রোত-ধারায় শহীদ জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে স্বেচ্ছাচারিতার লৌহকপাট ভেঙ্গে গণতন্ত্রকে অর্গলমুক্ত করেন। এরপর শুরু হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা। নিশ্চিত হয় মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার।’
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বহু চক্রান্তের চোরাগলি পথে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী সরকার আবারও বাকশালী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নতুন করে অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রকে মৃতপ্রায় অবস্থায় নিয়ে গেছে। এদের কাছে কখনোই গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার নিরাপদ থাকেনি।
অপর এক বার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান শাসন ১৯৭৫ সালের সেই দুঃশাসনেরই পুনরাবৃত্তি। বিএনপি সবসময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মর্মবাণী জনগণের মৌলিক অধিকার, বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ। আগামীতে দেশ ও জাতির স্বার্থে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের চলার পথকে নিষ্কণ্টক করবে।
(দ্য রিপোর্ট/টিএস-এমএইচ/এমডি/সা/জানুয়ারি ২৪, ২০১৪)