আহমদুল হাসান আসিক, দ্য রিপোর্ট : রমনা থানার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান রানা হত্যার ঘটনায় তিনটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব, ব্যবসা সংক্রান্ত দন্দ্ব ও সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব এই তিনটি বিষয় প্রাধান্য পাচ্ছে তদন্তে। এ ছাড়া নাশকতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তথ্য দেওয়ার কারণে তাকে খুন করা হয়েছে কিনা- সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম শুক্রবার সকালে এ সব কথা জানান।

তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করা হলেও এখন পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে রমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত খুনের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। কয়েকজনকে আটক করলেও দু’জন বাদে বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি আটকদের নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানান।

তিনি আরও জানান, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ মামলা দায়ের করেনি।

এদিকে পরিবারের দাবি, জাপানি তানভীর ও তারেককে বিভিন্ন অপকর্মে বাধা দেওয়ার কারণেই রানাকে খুন করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা জানায়, এলাকায় মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে চাদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে আসছিল তানভীর ও তারেক। কিন্তু রানা এ সব কাজে তাদের বাধা দিত। রানার কারণে তারা আধিপত্য বিস্তার করতে পারছিল না। তাই পরিকল্পিতভাবে তারা তাকে হত্যা করেছে।

রানার ছোট ভাই হাবিবুর রহমান মিঠু জানান, ঠিকাদারী ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল রানা। ঠিকাদারী নিয়েও কোনো সমস্যা ছিল না। বিভিন্ন সময় তানভীর ও তারেকের অপকর্মে বাধা দেওয়ার কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।

নিহতের ভাগ্নে আদর জানান, জাপানি তানভীর ও তারেক মগবাজারে মসজিদ গলি ১৭/২ বাসার সামনে মামাকে হত্যা করেছে। তানভীর ও তারেকসহ কয়েকজন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে প্রথমে গুলি এবং পরে কুপিয়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে রানার পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ করা হলেও রাজনৈতিক সহকর্মীরা রানার মৃত্যু নিয়ে মুখ খুলছে না। তারা বলছে, রানার খুনের কারণ সম্পর্কে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। এমনকি কী কারণে রানা খুন হয়েছে সে সম্পর্কে তারা কোনো ধারণাও করতে পারছে না।

রমনা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘আমি এতটুকু জানি রানা রমনা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিল। তবে রাজনৈতিক কারণে তাকে খুন করা হয়নি বলেই আমার মনে হয়।’

১৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কাজল জানান, রানাকে কী কারণে বা কারা খুন করেছে আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তিনিও জানান, রমনা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিল রানা। রাজনৈতিক কারণে তাকে খুন করা হয়েছে কিনা- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো কিছু জানেন না বলে জানান।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মগবাজারের মসজিদ গলিতে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা রানাকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর রানাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত ৮টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

(দ্য রিপোর্ট/এএইচএ/এসকে/জানুয়ারি ২৪, ২০১৪)