দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আইসিসি’র সহ-সভাপতি শুধুই অলঙ্কারিক পদ, নেই পরিচালনা পরিষদের সভায় ভোটাধিকার। এমনকি আইসিসি’র সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করার সুযোগ নেই। তারপরও বাঙালি বলেই আইসিসি’র ফিন্যান্স অ্যান্ড কমার্শিয়াল কমিটির দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট প্রস্তাব মেনে নিতে পারছেন না বিসিবি’র সাবেক সভাপতি ও আইসিসি’র সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। গত ৯ জানুয়ারি আইসিসি’র সভায় ওই প্রস্তাব ওঠার ২ সপ্তাহ পর বিসিবি’র সভায় পরিচালকদের মতামত নিয়েছেন বোর্ড সভাপতি। সেই সভায় ২১ পৃষ্ঠার এই প্রস্তাবের কপি পরিচালকদের হাতে না দিয়ে তার সারমর্ম শুধু শোনানো হয়েছে। বলা হয়েছে এই প্রস্তাব অনুমোদিত হলে বাংলাদেশ আর্থিকভাবে লাভবান হবে। কিন্তু কীভাবে তা বিস্তারিত বোর্ডের অনেক পরিচালকের কাছেই অজানা।

আগামী ২৯ জানুয়ারি আইসিসি’র বোর্ড সভায় বিতর্কিত প্রস্তাব অনুমোদিত হবে, তা মনে করছেন না আইসিসির সহ-সভাপতি লোটাস কামাল। বলেছেন, ‘এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন। এ ধরনের কিছু ঘটার আগে অনেক আলোচনা পর্যালোচনা হবে। পথটা অনেক লম্বা। তিনি আরও বলেছেন, ‘ক্রিকেট বিশ্বে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এমন কিছু করা উচিৎ হবে না। জনপ্রিয়তাই বলুন কিংবা রাজস্ব এবং ক্রিকেটের প্রশাসনিক দিক, গত এক দশকে ক্রিকেট অনেক এগিয়েছে। তাই এই সময়ে পরিবর্তন আনা ঠিক হবে না।’

বিশ্বের অনেক বোর্ডই এই প্রস্তাবে বিস্ময় প্রকাশ করেছে, তা উল্লেখ করেছেন তিনি- ‘আমি বিভিন্ন বোর্ডের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি, তারাও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাদের কারও এই প্রস্তাব নিয়ে ধারণা নেই। তা ছাড়া এই মুহূর্তে প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে জানানো হয়নি। তাই এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’

দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট ফরমেটের প্রস্তাব বিসিবিকে উদ্বিগ্ন না করলেও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মনোবলে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে, বাংলাদেশ কোচ শেন জার্গেনসেন তা চাপা রাখতে পারেননি। নিজ থেকেই জানিয়েছেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে গত ১২ মাসে নিজেদের অর্জন নিয়ে আমরা গর্বিত। এই সময়ে আমরা নিজেদের রেকর্ড ৩ বার ভেঙ্গেছি। ছেলেরা ভীষণ হতাশ। বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করছে, একটু-একটু করে উন্নতি করেছে। এই ধরনের ক্রিকেটে ভালো করতে হলে বেসিক ভালো থাকা প্রয়োজন।’

এদিকে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের সাধারণ সম্পাদক নিশান্থ রানাতুঙ্গা বলেছেন, ‘আইসিসি প্রেসিডেন্টকে এই প্রস্তাবনার কাগজগুলো পুনর্বিবেচনার জন্য চিঠি দেওয়া হবে বলে নির্বাহী কমিটি একমত হয়েছে। প্রশাসনিক দিক থেকে শুরু করে পারফরমেন্স, দীর্ঘদিন ধরে শ্রীলঙ্কা অনেক কিছু অর্জন করেছে। এই বিষয়টি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটে কতটা বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, যা সমর্থন যোগ্য নয়, আইসিসিকে সে ব্যাখ্যাই দেওয়া হবে।’ এই প্রস্তাব অনুমোদিত হলে ১৯৭৫ এবং ১৯৭৯’র বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবস্থান টেস্টে বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ের মতো নড়বড়ে হয়ে পড়বে, সে শঙ্কা করছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটারদের সংগঠনটিও। এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডকে আহ্বান জানিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ওয়েভেল হাইন্ডস।

(দ্য রিপোর্ট/এএস/সিজি/সা/জানুয়ারি ২৫, ২০১৪)