স্পোর্টিং উইকেটের প্রত্যাশা সাকিবের
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আগামী ২৭ জানুয়ারি প্রথম টেস্ট খেলতে মাঠে নামবে মুশফিক বাহিনী। টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামার আগে নতুন এক চাপ নিয়ে মাঠে নামবে তারা। আইসিসির করা খসড়া প্রস্তাবের চাপ মাথায় নিয়ে নিজেদের প্রমাণ করতে প্রস্তুত টাইগাররাও। শনিবার অনুশীলনের আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন সাকিব।
আইসিসির খসড়া প্রস্তাবের ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার। তিনি বলেছেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা এটা একটি স্পর্শকাতর ইস্যু। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমি সব ফরম্যাটের ক্রিকেট খেলতে চাই। যেভাবেই হোক যে নিয়মেই হোক। নিয়মিত খেলতে পারি ওয়ানডে সিরিজ কিংবা টোয়েন্টি২০ হোক, ম্যাচ খেলতে পারলেই হল।’ শুধু এ বিষয়ই নয়; অন্য আরও অনেক বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। নিচে তার কথোপকথনের অংশ তুলে ধরা হল-
প্রশ্ন : বাংলাদেশের পক্ষে ২০ উইকেট নেওয়া কি সম্ভব?
সাকিব : মানসম্মত বোলার আছে। তারপরও সব নির্ভর করবে উইকেটের উপর। যত ভালো বলই হোক না কেন উইকেট সমর্থন না দিলে কিছু সম্ভব নয়। আমার বিশ্বাস আমাদের সামর্থ্য রয়েছে।
প্রশ্ন : এ মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য কি বলে আপনি মনে করেন?
সাকিব : এখনও খেলা হয়নি তাই বলা মুশকিল। আমরা ওদের ওখানে গিয়ে খুব ভালো খেলেছি। এখন আমরা হোমে ক্রিকেট খেলব আমাদের সম্ভাবনা আরও ভালো থাকবে। গত দুই/এক বছর আমরা হোমে খুব ভালো খেলেছি। যদি ভালো খেলতে পারি, মনে হয় না ওদের সঙ্গে খুব বেশি পার্থক্য থাকবে না।
প্রশ্ন : কি ধরনের উইকেট আশা করছেন?
সাকিব : আমি বলব আমার কাছেস্পোর্টিং উইকেটই ভালো। যেহেতু, ২টি দলই এশিয়ার টিম। আমরা যদি স্পিন উইকেট বানাই ওদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেননা, তাদের স্পিন আক্রমণ ও স্পিনের বিপক্ষে ব্যাটিং খুবই ভালো। আমার মনে হয় স্পোটিং উইকেট বানালে সবার জন্যই ভালো হবে। সবাই রান পাবে এবং বোলিং করলে উইকেট পাবে। আমরা এখন অনেক অভিজ্ঞ একটা দল। গত কয়েকবছর ধরে ভালোও খেলছি ব্যক্তিগত ও দলগতভাবে। এখন পারফর্মারের সংখ্যাও অনেক বেশি। দলের ভেতরে একটি কম্পিটিশন কাজ করছে। অন্যদিকে যারা দলের বাইরে ছিল তারাও খুব ভালো পারফর্ম করছে। এই চাপটা দলের জন্যও ভালো, দেশের ক্রিকেটের জন্যও ভালো।
প্রশ্ন : শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনআপ আমাদের জন্য হুমকি কিনা?
সাকিব : সব ব্যাটসম্যানই তো হুমকি। কারণ আউট তো সবাইকে করেতে হবে। আমাদের ২০ উইকেট নিতে হবে। ওদের কিছু খেলোয়াড় আছে সাঙ্গাকারা-জয়বর্ধনে এদের সঙ্গে ম্যাথিউস ভালো খেলছে। সবমিলিয়ে টপ ৬-৭ ব্যাটসম্যান ভালো খেলতে হয় একটা টেস্ট দলের যা ওদের দলে রয়েছে।
প্রশ্ন : আইসিসির নতুন প্রস্তাব নিয়ে দলে কোনো চাপ রয়েছে কিনা?
সাকিব : থাকা উচিত নয়। আমি আমার বিষয়ে বলতে পারি। আমার নেই। এটা যার যার ব্যক্তিগত মতামত। আমার মনে কোনো চাপ নেই।
প্রশ্ন : আইসিসির নতুন প্রস্তাব দলে জয়ের ব্যাপারে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে কিনা?
সাকিব : কেউ যদি এটাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিতে চায় নিতে পারে। আমি যেটা বিশ্বাস করি অনুপ্রেরণার বিষয়টি যার যার ব্যক্তিগত মতামত থেকে আসবে। কেউ নিজের পারফর্ম থেকে অনুপ্রেরণা পেতে পারে। কেউ দর্শক থেকে। কাজেই যে কোনো দিক থেকেই অনুপ্রেরণা পাওয়া যেতে পারে। যদি এমন হয় এ ২টি টেস্ট আমাদের প্রমাণের সুযোগ তবে এটাই হবে অনুপ্রেরণা।
প্রশ্ন : শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে প্রস্তুতি কেমন হয়েছে?
সাকিব : আমার মনে হয়, ভালো। বিসিএলে ২টি ম্যাচই কোয়ালিটি ক্রিকেট হয়েছে। যদিও আমি ছিলাম না আমার পক্ষে বলা মুশকিল। সবমিলিয়ে আমি স্কোর এবং পেপার কিংবা টিভিতে দেখে বুঝেছি একটা ভালো প্রতিযোগিতা হয়েছে। খেলোয়াড়দের জন্য লিডিং আপ টু ডি টেস্ট ম্যাচ।
প্রশ্ন : শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের লক্ষ্য কি হবে?
সাকিব : সবসময় তো জয়ের জন্যই খেলতে নামি। ড্র কিংবা ভালো খেলব এই বার্তা অনেক আগেই আমাদের জন্য শেষ হয়ে গেছে। জেতার জন্যই খেলব। পুরো দলই ওভাবেই চিন্তা করেছে। তারপরও যেহেতু ৫ দিনের খেলা। অনেক সেশন আছে। সেশনগুলো জিততে পারলে ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব।
প্রশ্ন : প্রথম টেস্টের মূল একাদশ কেমন হতে পারে?
সাকিব : আমাদের দল এখনও ঠিক হয়নি। মার্শাল আগে কিছু টেস্ট খেলেছিল। শামসুর এখনও খেলেনি। ইমরুলের বেশকিছু টেস্ট ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। দায়িত্ব এখন সবার। কেউ নতুন এসেছে। তাই বলে ওর দায়িত্ব থাকবে না এমন নয়। দায়িত্ব ওরও আছে। নতুন খেলোয়াড় প্রত্যাশা করে বলেই ১৪ জনের দলে সুযোগ পেয়েছে। বাংলাদেশের টপ ১৪ জন খেলোয়াড় সুযোগ পেয়েছে, তারা পারফর্ম করার যোগ্য বলেই। সবার দায়িত্ব আছে। একটা দলে একজন/দুইজন পারফর্ম করলে খুব কম ম্যাচই জেতা যায়। আমাদের দলে অবশ্যই সবাইকে পারফর্ম করতে হয়। নতুন খেলোয়াড় যদি পারফর্ম করে তবে দলের জন্য তা আরও ভালো হবে।
(দ্য রিপোর্ট/এএস/সিজি/সা/জানুয়ারি ২৫, ২০১৫)