মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে ২১২০ কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
জোসনা জামান, দ্য রিপোর্ট : মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে আরো ২ হাজার ১২০ কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এর আগে এ বাবদ সংস্থাটি আরো ১ হাজার ৯৬ কোটি টাকা সহজ শর্তের ঋণ দিয়েছিল। অতিরিক্ত এ অর্থায়নের ফলে নতুন করে ৯০টি উপজেলার সবগুলো স্কুলের মাধ্যমিক পর্যায়ে উপবৃত্তি কর্মসূচি চালু করাসহ শিক্ষার উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে বিশ্বব্যাংক ডিএলআই (ডিসবার্সমেন্ট লিংক ইন্ডিকেটর) পদ্ধতিতে অর্থছাড় করবে বলে জানা গেছে। তার মানে হচ্ছে কতকগুলো নির্দেশক (যেমন বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ৬০ শতাংশে উন্নীত করা) বাস্তবায়ন করতে হবে, যা আগে থেকেই দেয়া রয়েছে। সেগুলো যত তাড়াতাড়ি পূরণ হবে তত তাড়াতাড়ি অর্থছাড় হবে।
একনেকের রবিবার বৈঠকে এ প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন করা হতে পারে বলে জানা গেছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সস্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিতব্য ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আব্দুল মান্নান হাওলাদার জানান, বিশ্ব ব্যাংক অতিরিক্ত অর্থ দিতে রাজি হওয়ায় সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহান্সমেন্ট প্রজেক্টটি দ্বিতীয়বারের মতো সংশোধন করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, মাধ্যমিক শিক্ষার এ প্রকল্পের আওতায় অতিরিক্ত অর্থায়ন বিষয়ে ২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ঢাকায় ঋণ নেগোসিয়েশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ৪০ বছর। এক্ষেত্রে বার্ষিক সার্ভিস চার্জ দিতে হবে শতকরা শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং কমিটমেন্ট চার্জ শতকরা শূণ্য দশমিক ৫০ শতাংশ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পটি মোট ১ হাজার ১৮১ কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০০৮ সালের জুন থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ২০০৮ সালে একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এসময় বিশ্বব্যাংকের ঋণ ছিল প্রায় ১ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। পরবর্তীতে ব্যয় বেড়ে গেলে মোট ব্যয় ১ হাজার ২২১ কোটি ৯৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ধরে প্রথম দফার সংশোধন করা হয়। বর্তমানে বিশ্বব্যাংক অতিরিক্ত অর্থায়ন করতে আগ্রহ প্রকাশ করলে দ্বিতীয় সংশোধনীর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় এবং এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে।
শুরুতে এ প্রকল্পের আওতায় ১২৫টি উপজেলার মাধ্যমিক স্কুলে উপবৃত্তি এবং শিক্ষার মান উন্নয়নে নানা কর্মসূচি পরিচালিত হয়েছিল। এখন বিশ্বব্যাংকের অতিরিক্ত অর্থ পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির হার এবং টিউশন ফি বৃদ্ধি পাবে। প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ছে সাড়ে তিন বছর।
সূত্র জানায়, দেশে চলমান ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পণায় অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিদ্যমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ ও ল্যাব সুবিধা বৃদ্ধি, শিক্ষার সকল ক্ষেত্রে আইসিটি ও কারিগরি শিক্ষার প্রয়োগ, শিক্ষার গুনগতমান উন্নয়নের জন্য শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। তাই এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে।
দ্বিতীয় সংশোধনীর ক্ষেত্রে পরিকল্পণা কমিশনের পরামর্শের জবাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের ডিএলআই পদ্ধতিতে অর্থছাড়ে কোন জটিলতা হবে না। এজন্য গত বছরের ২২ অক্টোবর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব আরাস্তু খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় এ বিষয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/জেজে/এমএ/জেএম/জানুয়ারি ২৫, ২০১৪)