‘মেধা বিকাশের সুযোগের অভাবে পাচার হচ্ছে মেধা’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দেশে মেধা বিকাশের সুযোগ ও চাকরির অভাবের কারণে মেধার পাচার হচ্ছে। মানুষের মধ্যে দেশপ্রেমের অভাবও এর একটি বড় কারণ। উচ্চশিক্ষার মান বাড়ানো পাশাপাশি মেধা বিকাশের সুযোগ ও মেধাবীদের যথাযথ মুল্যায়নের মাধ্যমে মেধা পাচার রোধ করা সম্ভব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে শনিবার বিকেলে ‘উচ্চশিক্ষা মেধাচর্চা ও মেধা পাচার’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এ সব কথা বলেন।
জার্নি একাডেমিয়া নামে একটি সংগঠন এই সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন ও বিভিন্ন আন্দোলনের দুর্লভ ছবি নিয়ে নির্মিত ‘অক্সফোর্ড অব দ্যা ইস্ট’ নামে একটি এ্যালবাম প্রকাশ করা হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়্যারম্যান অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘আগের সময়ের ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক বর্তমানে নেই। এতে করে শিক্ষকরা ছাত্রদের দুর্বলতা ধরতে পারেন না। পদ-পদবীর লোভে শিক্ষকরা সবকিছুকে ভুলে যাচ্ছেন। নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে দেশ ও সভ্যতার কথা বাদ দিয়ে নিজের জন্য কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ‘মেধাবীরা যারা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন, তাদের ফিরিয়ে এনে দেশেই রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের ফিরিয়ে আনতে কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ‘অত্যন্ত মেধাবীরা এখানে ভর্তি হচ্ছে। তবে মেধা চর্চার যথাযথ পরিবেশ দেওয়া সম্ভব হয় না। এতে করে একটি সিটের জন্য রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছে। অনেক প্রতিকূল পরিবেশের মুখোমুখি হয়েও মেধার স্বাক্ষর রাখছে। যারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মেধার স্বাক্ষর রাখছে, দেশপ্রেমের কথা চিন্তা করে কাজ করতে হবে।’
মেধা সৃষ্টি করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সুযোগ ছিল তা করতে সক্ষম হয়নি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মেধাবীদের মেধা সৃষ্টির স্থান। এক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের যে সুযোগ ছিল তা করতে পারেনি। কেনো পারেনি তা খতিয়ে দেখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মেধাকে ধরে রাখতে হলে অনুকূল পরিবেশ তৈরী করতে হবে। সার্কভুক্ত বা অন্য দেশে শিক্ষকরা পারিশ্রমিক পান, আমাদের দেশে তা দেওয়া সম্ভব হয় না। দেশপ্রেমকে জাগ্রত করা সম্ভব হলে মেধা পাচার রোধ করা সম্ভব হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মেধাচর্চা করা হয়। তবে শিক্ষাথীদের মেধা চর্চাতে শিক্ষকরা বাধা হিসেবে কাজ করছে। শিক্ষকরা আইন লঙ্ঘণ করলেও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। স্বাধীন দেশে এমনটি চলতে পারে না। শিক্ষকদের জবাবদিহিতার জন্য ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশে পরিবর্তন আনা দরকার।’
অগ্রণী ব্যাংকের চেয়্যারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম, ইউআইটিএসের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম খান, দৈনিক সমকালের সহযোগী সম্পাদক অজয় দাসগুপ্ত ও ডাকসুর সাবেক জিএস ও গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামান প্রমুখ।
(দ্য রিপোর্ট/জেএইচ/এসবি/জানুয়ারি ২৫, ২০১৪)