কাওসার আজম ও মীর মো. ফারুক, টঙ্গী ইজতেমা ময়দান থেকে : টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে চলা তাবলীগ জামায়াতের বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে অভিনব মোবাইল চার্জের ব্যবসা বেশ জমে উঠেছে। দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিরা মোবাইলে চার্জ দিতে বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা দিয়ে সুযোগ না পেয়ে খুঁজে নিচ্ছেন অভিনব এসব দোকান। টঙ্গী ও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন মোবাইলে টাকা রিচার্জ দোকান ও ছোট ছোট মনোহরী বা কোথাও অস্থায়ী দোকানে এ অভিনব ব্যবসা চলছে। প্রতি মোবাইল চার্জ দিতে নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা করে। প্রত্যক্ষদর্শী ও ইজতেমায় অংশ নেওয়া মুসল্লিদের কাছ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে টঙ্গীতে লাখো মানুষের জমায়েত ঘটেছে। আর এটিকে পুঁজি করে অনেকেই অভিনব এ ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন। এদের একজন টঙ্গী বাজারের বাটা মার্কেটের বিপরীত দিকে মোবাইলে টাকা রিচার্জ করার দোকানদার মহিউদ্দিন। তার দোকানে মোবাইলে টাকা রিচার্জ করার পাশাপাশি দু’টি কাঠের টুকরা দিয়ে তাতে ২৫টি সকেট লাগিয়েছেন। একসঙ্গে তার দোকানে ২৫টি মোবাইল চার্জ দেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে মহিউদ্দিনের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, মোবাইলে চার্জ দিতে ইজতেমায় আগত মুসল্লিরা লাইন দিয়ে আছেন। বিনিময়ে প্রতি মোবাইল চার্জের জন্য দিচ্ছেন ১০ টাকা।

মহিউদ্দিন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘বুদ্ধিটা আমার নয়, আমার তিন ছেলের মাথা থেকেই এটি এসেছে।’ দোকানে উপস্থিত মহিউদ্দিনের ছোট ছেলে টঙ্গী সিরাজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র আসিফ জানায়, ‘ইজতেমা শুরুর কয়েকদিন আগে থেকেই অনেক লোক দোকানে এসে বলে মোবাইলে চার্জ দেওয়া যাবে কি না। তখন আমাদের দোকানে দুইটার বেশি মোবাইলে চার্জ দেওয়ার সুযোগ ছিল না। পরে আমরা তিন ভাই আব্বুকে বললাম ইজতেমার সময় যেহেতু অনেক লোক আসবে তাই অনেক সকেট লাগিয়ে চার্জ দেওয়ার ব্যবসা করা যায় কি না। আব্বু আমাদের কথা মতো কাঠের টুকরায় ২৫টি সকেট লাগিয়েছেন। প্রতিটি মোবাইল চার্জ দিতে ১০ টাকা করে নিচ্ছি।’

একটা মোবাইলে চার্জ দিতে ২-৩ ঘণ্টা সময় লাগে বলে জানান আসিফের বাবা মহিউদ্দিন। তিনি জানান, আমাদের দেখাদেখি অনেকেই এ ধরনের ব্যবসা করছে টঙ্গীতে।

মহিউদ্দিনের দোকানে মোবাইল চার্জ দাঁড়িয়েছিলেন ইজতেমায় আগত কিশোরগঞ্জের মুসল্লি আল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মোবাইলে চার্জ শেষ হওয়ায় কথা বলতে পারছিলাম না। অনেক জায়গায় ঘুরেছি, কিন্তু চার্জ দেওয়ার সুযোগ পাইনি। শেষ পর্যন্ত ১০ টাকা দিয়ে এখানে চার্জে মোবাইল লাগিয়েছি। তিনি বলেন, ‘টাকা না হয় ১০টা গেল, কিন্তু উপকারটা তো হচ্ছে।’

এদিকে মোবাইলে টাকা রিচার্জ করা নিয়েও জমজমাট ব্যবসা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ইজতেমায় আসা লোকদের কাছে ২০ টাকার রিচার্জ ২২-২৫ টাকা, ৫০ টাকার রিচার্জ ৫৫ টাকা নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বেশ কিছু মুসল্লি।

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এমএফ/জেএম/জানুয়ারি ২৫, ২০১৪)