রেজোয়ান আহমেদ, দ্য রিপোর্ট : আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত আন্তর্জাতিক সংস্থা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বাণিজ্য মেলায় প্রতিবারের মতো এবারও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করছে। বাণিজ্য মেলায় সংস্থাটির স্টলে এসে কেউ স্বেচ্ছায় রক্তদান করলে তার দেহে হেপাটাইটিস-বিসহ ক্ষতিকারক ভাইরাসের উপস্থিতি আছে কিনা তা জানা যায়।

সংস্থাটি মেলার ১ম আসর থেকে এ কর্মসূচি পালন করে আসছে।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রোগ্রাম অফিসার মো. শাহ রাজিউর রহমান (রাজু) রবিবার দ্য রিপোর্টকে জানান, মেলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। মেলার শুরু থেকে নিয়মিতভাবে কমবেশি ২৫-৩০ ব্যাগ করে রক্ত পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া মেলা জমে উঠলে দৈনিক ৫০-৬০ ব্যাগ রক্ত পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

শাহ রাজিউর রহমান জানান, রক্ত দিলে কোনো ক্ষতি হয় না। বয়স ১৮ থেকে ৬০ ও ওজন কমপক্ষে ৪৫ কেজি এমন সুস্থ ব্যক্তি চাইলেই স্বেচ্ছায় রক্তদান করতে পারেন। এক ব্যাগ রক্ত ৫-৬ মিনিটে ও কোনো ব্যথা ছাড়া সংগ্রহ করা হয়। আর কেউ রক্ত দিলে তার হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, এইচআইভি এবং সিফলিস এর ভাইরাস আছে কি না-তা এখান থেকে জানা যায়। আর রক্তদাতা কারো মধ্যে এইসব জীবাণু পাওয়া গেলে গোপনীয়তা রক্ষা করে বিনামূল্যে পরামর্শ বা চিকিৎসা দেওয়া হয়।

মেলাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি থেকে সংগৃহীত রক্ত মানবতার সেবায় ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে থ্যালাসিমিয়া রোগীদের জন্য এ রক্ত ব্যবহার হয় বলে জানান রাজু। তিনি বলেন, ‘এইসব রোগীর শরীরে রক্ত জন্মায় না।’

সংগৃহীত রক্ত ৮০০ টাকায় (১টি প্যাকেজ) এক ব্যাগ বিক্রি করে সংস্থাটি। ৮০০ টাকার প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে রক্ত ১ ব্যাগ, বেড, ডাক্তার, নাস্তা ইত্যাদি। আর গরীবদের জন্য এ সুযোগ অর্ধেকে দেওয়া হয়। এ ছাড়া যে স্বেচ্ছায় রক্ত দেন তাকে একটি আইডি কার্ড দেওয়া হয়। আইডি কার্ডধারী ব্যক্তির কখনো প্রয়োজন পড়লে ফ্রি রক্ত দেওয়া হয়।

মাইকে ঘোষণা দেওয়া একজন মুমূর্ষু রোগীর জন্য এ পজিটিভ রক্ত লাগবে এমন খবরে স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে এসেছেন জনাব রাশেদ। তিনি বলেন, ‘মানবতা বোধ থেকে রক্ত দিতে এসেছি। একজন মানুষের উপকারার্থে রক্ত দিতে পেরে আমি আনন্দিত। আর রক্ত দিলে যেহেতু কোনো ক্ষতি হয় না সেহেতু মানবতার সেবায় সবার এ ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ডে এগিয়ে আসা উচিত।’

মানুষের উপকারার্থে স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে এসেছেন বলে জানালেন হাফিজুর রহমান। রক্ত দেওয়া তারই বন্ধু শাহালম জানান, কারো যদি কখনো প্রয়োজনে বা উপকারে আসে সে লক্ষ্যে এ রক্ত দেওয়া।

অলাভজনক আন্তর্জাতিক সংস্থাটি বিশ্বের ১৯৮টি দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদানসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড পালন করে থাকে। অলাভজনক প্রতিষ্ঠান তাহলে কার্যক্রম পরিচালনা করে কীভাবে-এমন প্রশ্নের জবাবে রাজু বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ আর্থিকভাবে সাহায্য করে থাকে। যা দিয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ’

(দ্য রিপোর্ট/আরএ/এনডিএস/জানুয়ারি ২৬, ২০১৪)