অবশেষে শেষ হলো রাবির ভর্তি পরীক্ষা
রাবি সংবাদদাতা : রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে বারবার পরীক্ষা পেছানোর পর এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষা রবিবার শেষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি অনুষদের ৪৯টি বিভাগে শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল ২৩ থেকে ২৭ জানুয়ারি। কিন্তু ২৭ জানুয়ারি লিখিত পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় ২৬ জানুয়ারি পরীক্ষা শেষ হয়।
পরীক্ষা চলাকালে প্রতিদিনই ঘটেছে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা। পরীক্ষার প্রথম দিন ক্যাম্পাসে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পুলিশসহ ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী আহত হন।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ই’ ইউনিটের পরীক্ষার দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় জালিয়াতির দায়ে দুজনকে আটক করা হয়। তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় সিরাজী ভবনের ১২০ নম্বর কক্ষ থেকে তরিকুল ইসলাম ও বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২১০ নম্বর কক্ষ থেকে আসাদুর রহমান বাপ্পি।
দুপুরে বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের বিজোড় রোল নম্বরধারীদের পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় মমতাজউদ্দিন কলাভবন থেকে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে উত্তর সংগ্রহের সময় বায়জিদ আহমেদকে আটক করা হয়। বিকেলে একই ইউনিটের জোড় রোল নম্বরধারীদের পরীক্ষা চলাকালে নূরজাহান আক্তার নামের আরেক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
পরীক্ষার তৃতীয় দিন শনিবার বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটে ভুয়া পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগে দুজনকে আটক করা হয়। তারা হলেন রুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শামীম হোসেন ও ঢাকার ডেফোডিল ইউনিভার্সিটির ছাত্র কল্লোল হোসেনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবন থেকে আটক করা হয়। একই সময় রিপন হোসেন নামের আরেক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
এ ছাড়াও ওই দিন পরীক্ষার কক্ষে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় মোছা. রশ্মি আক্তার নামের এক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
ভর্তি পরীক্ষার শেষ দিন রবিবার ‘এফ’ ইউনিটের (অ-বিজ্ঞান গ্রুপ) পরীক্ষা চলাকালে রোল নম্বর পরিবর্তনের অভিযোগে পাবনা থেকে আসা ভতিচ্ছু শিক্ষার্থী এসএম শফিকুল ইমলাম ও সিরাজগঞ্জ থেকে আসা শারমিন সুলতানা মীমকে আটক করা হয়।
আটক শিক্ষার্থীদের মধ্যে তরিকুল ইসলাম, আসাদুর রহমান বাপ্পি ও ইফতিয়াজ আহমেদ রাব্বিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মতিহার থানা থেকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিসে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর প্রফেসর তারিকুল হাসান বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে আটকদের অপরাধ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্র জালিয়াতি চক্রের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা হয়েছে। জালিয়াতি চক্রকে আটক করতে পুলিশ প্রশাসন কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুর নূর বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে আটক তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র জালিয়াতির চক্র ও ক্যাম্পাসে ককটেল হামলাকারীদের আটক করতে পুলিশ চেষ্টা করছে।
ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার ব্যাপারে উপাচার্য প্রফেসর ড. মিজানউদ্দিন ও উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সারওয়ার জাহান সজল বলেন, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যেও ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সন্তুষ্ট। পরীক্ষায় সহযোগিতা করার জন্য শিক্ষার্থী, ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, অভিভাবক, রাজশাহী সিটি করপোরেশন, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, গণমাধ্যম ও এলাকাবাসীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
(দ্য রিপোর্ট/এমএএ/এফএস/ইইউ/শাহ/জানুয়ারি ২৭, ২১০৪)