দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত ছয় লাখ বাংলাদেশীর হাতে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (এমআরপি) পৌঁছে দেওয়ার জন্য ঠিকাদার নিয়োগসহ ছয়টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

সচিবালয়ে সোমবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এটি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের প্রথম ক্রয় কমিটির বৈঠক।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নূরুল করিম সাংবাদিকদের জানান, সভায় ছয়টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, আউটসোর্সিং বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করা বাংলাদেশীদের মধ্যে পাসপোর্ট বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশীদের হাতে হাতে এমআরপি পাসপোর্ট পৌঁছে দেওয়ার কাজটি পেয়েছে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান ‘ডাটা এজ আই পিপল কনসোর্টিয়াম’। প্রতিটি পাসপোর্ট বিতরণের জন্য ডাটা এজ পাবে ১৮ ডলার। এ হিসেবে সেখানে বসবাসরত ছয় লাখ পাসপোর্ট বিতরণের জন্য প্রতিষ্ঠানটি পাবে ৮৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ১৮ মাসের মধ্যে পাসপোর্ট বিতরণের কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইসিএও) নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১৫ সালের মার্চের মধ্যে সব প্রবাসী বাংলাদেশীকে এমআরপি দেওয়া বাধ্যতামূলক। ডাটা এজ মালয়েশিয়ার বিভিন্ন স্থানে আটটি কেন্দ্র স্থাপন করবে। সেখানে বসবাস করা বাংলাদেশীরা এ সব কেন্দ্রে এসে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করবেন। ডাটা এজ সেই তথ্য অনলাইনে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে ঢাকায় পাসপোর্ট অধিদফতরে পাঠাবে। সেখান থেকে তৈরি হওয়া পাসপোর্ট মিশনের মাধ্যমে আবার মালয়েশিয়ায় পাঠানো হবে। এরপর ডাটা এজ তাদের লোকবলের মাধ্যমে বাংলাদেশীদের কাছে পাসপোর্ট বিতরণ করবে।

দেশের অভ্যন্তরে পণ্য পরিবহনের জন্য চট্টগ্রাম ও খুলনা নৌ-বন্দরের জন্য দুটি করে চারটি কন্টেইনারবাহী জাহাজ ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ‘চারটি ১০৮ টিইইউ সেলফ প্রপেন্ড মাল্টিপারপাস ইনল্যান্ড কন্টেইনারবাহী জাহাজ নির্মাণ/সংগ্রহ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় এ জাহাজ ক্রয় করবে বিআইডব্লিউটিসি। ১৫৮ টিইইউ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিটি ৩৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা করে চারটি কন্টেইনার জাহাজের দাম পড়বে ১৫১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

নূরুল করিম জানান, জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের ডিজাইন ও নির্মাণ কাজ তদারকির পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে কোরিয়া, ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ প্রতিষ্ঠান কুনহুয়া ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসালটেন্ট কোম্পানি লিমিটেড। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৪ কোটি ৪৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা।

‘সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) সড়ক সংযোগ প্রকল্পের আওতায় এ সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান ৭০ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীতকরণ, দুর্ঘটনার ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়ন, পাঁচটি ফ্লাইওভার, ২৭টি সেতু, ৬০টি কালভার্ট নির্মাণ এবং সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয় নির্মাণ করা হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরে সাধারণ কার্গো বার্থে (জিসিবি) মালামাল হ্যান্ডেলিংয়ে পাঁচজন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিন বছরের জন্য পাঁচ অপারেটর নিয়োগে ব্যয় হবে ৮৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

নৌ-মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জিসিবি এলাকায় ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৩ নং জেটিতে এ অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ১৭ কোটি ৯৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় ৯নং জেটির কাজ পাচ্ছে ফজলীসন্স লিমিটেড, ১৭ কোটি ৯৯ লাখ ৭০ হাজার টাকায় ১০নং জেটির কাজ পাচ্ছে বশির লিমিটেড, ১৭ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ১১নং জেটিতে এ এন্ড জে ট্রেডার্স, ১৭ কোটি ৯৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় ১২নং জেটির কাজ পাচ্ছে এভারেস্ট এন্টারপ্রাইজ এবং ১৭ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার টাকায় ১৩নং জেটির কাজ পাচ্ছে এম এইচ চৌধুরী লিমিডেট।

পল্লী বিদ্যুতায়নের আওতায় পাঁচ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সাতটি পাওয়ার ট্রান্সফারমার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ট্রান্সফারমার সরবরাহের কাজটি পেয়েছে টিএস ট্রান্সফরমার লিমিটেড।

এ ছাড়া ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ গম আমদানির কাজটি পেয়েছে মেসার্স ফনিক্স কমোডিটিস লিমিটেড। প্রতি টন গমের দাম ধরা হয়েছে ৩০৫ দশমিক ৬০ ডলার। এ গম আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ১২০ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এমএআর/জানুয়ারি ২৭, ২০১৪)