রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র চান না স্থানীয়রা

চিংড়ি চাষী রবিউল শেখ জানিয়েছেন তার ১৮ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে প্রকল্পের জন্য। এই জমি নেওয়ার সময় তাকে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কথা বলা হয়নি। সরকার উন্নয়নমূলক কিছু করবে, এমনটাই প্রথমে জেনেছিলেন। অনেক পরে গিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথা জানতে পারেন।
গ্রামের নারীরাও প্রকল্প সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। গৃহিনী শ্যামলী বলছিলেন, ‘এখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে খুব খারাপ হবে। শুনেছি পরিবেশ নষ্ট হবে। পশুর নদীর পানি নীল হয়ে যাবে। গাছগাছালি মারা যাবে। সাগর শুকিয়ে যাবে। তাই শুনেছি। সবাই তাই বলছে।’
স্থানীয় একজন কলেজ শিক্ষক স্বপ্না হালদার বলেন, ‘আমি পরিবেশবিদ নই। কিন্তু আমি নিজে যেটুকু বুঝি, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটা যেহেতু কয়লাভিত্তিক হবে, তার ধোঁয়া পরিবেশের ওপর নিশ্চয়ই খারাপ প্রভাব ফেলবে।’
পাশের গ্রামের কৃষক মো. ইয়াসিন আলী জানান, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ নির্মাণের ক্ষতির বিষয়গুলো এখন মানুষের মুখে মুখে। এভাবেই তারা বিষয়গুলো জানতে পারছেন।
রামপাল কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সভাপতি সুশান্ত কুমার দাশের বক্তব্য হচ্ছে, এখন সুন্দরবন রক্ষার বিষয়টিই স্থানীয়দের কাছে বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘পরিবেশের ক্ষতি হবে, এটা আমরা প্রথমে বুঝতে পারিনি। শুরুতে আমরা জমি রক্ষার আন্দোলন করেছিলাম। তারপর কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসে। সুন্দরবন এই এলাকাকে ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে। সেই সুন্দরবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে।’
প্রসঙ্গত, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার দুর্গম এলাকায় এই প্রকল্পে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের টার্গেট রেখে দু’টি কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অর্থাৎ প্রতিটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন।
(দিরিপোর্ট২৪/ওএস/এইচএস/জেএম/অক্টোবর ০৭ ২০১৩)