হাসিব বিন শহিদ, দ্য রিপোর্ট : সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন শাখায় হল-মার্কের নন-ফান্ডেড দায়ের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দ্রত অনুসন্ধান ও তদন্ত সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিকুর রহমান এক পত্রের মাধ্যমে দুদককে এ অনুরোধ করেন। গভর্নরের দেওয়া ওই চিঠি সোমবার দুদকে আসলে কমিশনের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বিষয়টি দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন। দুদক সূত্র এ সব তথ্য দ্য রিপোর্টকে নিশ্চিত করেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘হল-মার্কের নন-ফান্ডেড অংশের তদন্ত কাজ দ্রুত করার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা এ মাসের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছি। তবে আরও কয়েকদিন বেশি সময় লাগতে পারে। কারণ ৩৫টি ব্যাংক এর সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে।’

২০১০ সাল থেকে ২০১২ সাল সময় পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন শাখা থেকে হল-মার্ক তিন হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা আত্মসাত করে। এর মধ্যে ফান্ডেড এক হাজার ৮৩৭ কোটি ২০ লাখ এবং নন-ফান্ডেড এক হাজার ৭০৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সোনালী ব্যাংক হোটেল শেরাটন শাখায় জালিয়াতিমূলক স্বীকৃত বিলসমূহ দুদকের তদন্তাধীন থাকায় সোনালী ব্যাংক তাদের দায়ের অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না। এ কারণে ব্যাংকের দীর্ঘদিন ধরে অনিষ্পন্ন বিলগুলো নিষ্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ব্যাংকিং খাতে পারস্পরিক আস্থাহীনতা ও ব্যবসায় অনীহা সৃষ্টি হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে এর নেতিবাচক প্রভাব ব্যাংক ব্যবসার ওপর পড়ছে। সোনালী ব্যাংকের নন-ফান্ডেড অংশের তদন্ত দ্রুত শেষ করে মামলা দায়ের করা হলে অনিষ্পন্ন বিলসমূহ নিষ্পত্তির জন্য সহায়ক হবে। ফলশ্রুতিতে ব্যাংকিং খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

দুদক সূত্র জানায়, হল-মার্কের অর্থ জালিয়াতির ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের ফান্ডেড অংশের জন্য দুদক এ পর্যন্ত হল-মার্কের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা দায়ের করেছে। ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর মামলাগুলো দায়ের করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টম্বর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে পেশ করা হয়। আর আদালতে তা দাখিল করা হয় ৬ অক্টোবর। এ ছাড়া ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি বাকি পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আরও ২৭টি মামলা দায়ের করে দুদক। তবে সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট নন-ফান্ডেড দায় ও স্বীকৃত বিলসমূহের বিপরীতে অন্যান্য ব্যাংকের শাখাসমূহের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার ৭০৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা জালিয়াতির তদন্ত এখনও সম্পন্ন হয়নি।

হল-মার্ক ছাড়া অন্য পাঁচটি প্রতিষ্ঠান হলো- প্যারাগন নিট কম্পোজিট, খানজাহান আলী সোয়েটার্স, ডি অ্যান্ড স্পোর্টস লিমিটেড, টি অ্যান্ড ব্রাদার্স ও নকশি নিট লিমিটেড।

দুদকের সিনিয়র উপ-পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি দল হল-মার্ক কেলেঙ্কারির অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্ত করছে।

(দ্য রিপোর্ট/এইচবিএস/এমএআর/জানুয়ারি ২৭, ২০১৪)