ইসমাইল কাদারে
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : কবি, ঔপন্যাসিক, রাজনীতিবিদ, বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবী ইসমাইল কাদারে ১৯৩৬ সালের ২৮ জানুয়ারি গ্রিসের সীমান্তবর্তী আলবেনিয়ার জেরোকাস্তায় জন্মগ্রহণ করেন। সোভিয়েত কবি ভ্লাদিমির মায়াকোভস্কির একনিষ্ঠ ভাবশিষ্য হিসেবে পরিচিত কাদারে আলবেনিয়ায় সর্বাধিক বই বিক্রির রেকর্ডধারী লেখক। লন্ডনের দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকা একবার তাকে গোগল, কাফকা ও অরওয়েলের সঙ্গে তুলনা করেছিল।
পাঁচ বছর বয়সে জেরোকাস্তার একটি মিশন স্কুলে তার লেখাপড়ার শুরু। স্কুল শেষে রাশিয়ার তিরানা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস ও দর্শন অনুষদে ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়েন। সেখানকার পড়া শেষে ভর্তি হন মস্কোর গোর্কি ইনস্টিটিউট ফর ওয়ার্ল্ড লিটারেচারে। প্রাতিষ্ঠানিক পড়া শেষে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন সাংবাদিকতা। ১৯৯০ সাল পর্য়ন্ত তার জীবনকালকে দুইভাগে ভাগ করা হয়- আলবেনিয়া ও ফ্রান্স। কম্যুনিস্ট শাসনামলে ১৯৭০ থেকে ১৯৮২ সাল পর্য়ন্ত আলবেনীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। রাজনৈতিক কারণে কিছু সময় দেশের বাইরে তার বই প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। এমনকি বিদেশ ভ্রমণের ওপরও নিষেধাজ্ঞা ছিল। বলা হয়ে থাকে, তিনি নিজের স্বাধীনতার জন্য যথেষ্ট মূল্য পরিশোধ করা লেখক।
দীর্ঘ সময় রাশিয়ায় কাটিয়ে ১৯৬০ সালে ফিরে আসেন মাতৃভূমিতে। কম্যুনিস্ট ও ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসন এবং শোষণপীড়িত মানুষের যন্ত্রণা নিয়ে লেখা প্রথম কবিতার বই ‘ড্রিমস’ মস্কোয় ১৯৫৭ সালে প্রকাশিত হয়। আলবেনিয়ায় ফিরে উপন্যাস লিখতে শুরু করেন। প্রায় ৩ বছর সময় নিয়ে লেখা তার প্রথম উপন্যাস ‘দ্য জেনারেল অব দি ডেড আর্মি’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৩ সালে। প্রকাশিত হওয়ার পরপরই উপন্যাসটি আলবেনিয়াসহ সমগ্র বিশ্বে আলোড়ন তোলে। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম হল- দ্য ওয়েডিং (১৯৬৪), দ্য ক্যাসেল (১৯৭০), ক্রোনিকল ইন স্টোন (১৯৭১), ব্রোকেন এপ্রিল (১৯৮০) ও দ্য পিরামিড (১৯৯২) ইত্যাদি। তার কয়েকটি বই বাংলায় অনুদিত হয়েছে। এর মধ্যে বুলবুল সরওয়ারের অনুবাদে ‘স্বপ্নমহল’ ও অমর মুদির অনুবাদে ‘উত্তরাধিকার’ উল্লেখযোগ্য। তার বই চল্লিশটি দেশে কমপক্ষে ত্রিশটি ভাষায় অনুদিত হয়েছে।
বেশ কয়েকবছর ধরে নোবেল পুরস্কারের জন্য তার নাম শীর্ষে উচ্চারিত হয়ে আসছে। ১৯৯৬ সালে তিনি ফ্রান্সের একাডেমি অব মর্যাল অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সেসের আজীবন সদস্য হন। দার্শনিক কার্ল পপারের স্থলাভিষিক্ত করা হয় তাকে। ১৯৯২ সালে পিক্স মন্ডিয়াল কিনো ডেল ডুকা পুরস্কার পান। ২০০৫ সালে প্রথম ‘দ্য ম্যান বুকার’ পুরস্কার পান। ২০০৯ সালে পান প্রিন্সেস অব অ্যাস্টুরিয়াস অ্যাওয়ার্ড। এছাড়া আরও অনেকগুলো পুরস্কার ও সম্মাননায় তিনি ভূষিত হয়েছেন।
তার স্ত্রীর নাম হেলেনা কাদারে। তাদের দুই সন্তান।
(দ্য রিপোর্ট/ডব্লিউএস/ এমডি/ জানুয়ারি ২৮, ২০১৪)