দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : কোন অধিকারে অনির্বাচিত ১৫৩ সংসদ সদস্য সংসদে যাবেন বলে প্রশ্ন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মঙ্গলবার বিকেলে ব্যারিস্টার খোকন মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের কারামুক্তি উপলক্ষে এ নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ড. এমাজউদ্দিন বলেন, জনগণ নির্বাচনে তাদের ভোটের মাধ্যমে ম্যান্ডেট দিয়ে থাকে। কিন্তু ১৫৩টি আসনে তো ভোটই হয়নি। ওই আসনগুলোতে জনগণ তাদের ম্যান্ডেট দেয়নি। তা হলে ওই আসনগুলোর সংসদ সদস্যরা সংসদে কীভাবে কথা বলবেন? তাদের কী সংকোচ হবে না? তারা কোন অধিকারে সংসদে যাবেন?

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ২ জানুয়ারি বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এবার দেশের জনগণ তা পারবে। কিন্তু নির্বাচনের আগেই তো ১৫৩ আসনে আপনাদের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে গেছেন। তা হলে জনগণ কীভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারল?

সরকারের উদ্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেকে এই উপাচার্য বলেন, উপজেলা নির্বাচন আপনাদের হাতে যাবে না। যেখানে যাওয়ার সেখানেই যাবে। প্রধানমন্ত্রী যদি উপজেলা নির্বাচন দেন তা হলে ২৯ ডিসেম্বর ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ তে যা হয়নি, তাই হবে।

১৮ শতাংশ ভোট নিয়ে জনগণের প্রতিনিধি হওয়া যায় না। তাই সংসদে গিয়ে দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, কৌশলগত কারণে বিএনপির আন্দোলন আপাতত বন্ধ রয়েছে। একবার শুরু করলে এই আন্দোলন চরম অবস্থায় নিয়ে যেতে এক থেকে দেড় মাসের বেশি সময় লাগবে না।

প্রধানমন্ত্রী ও এরশাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এরশাদ যেভাবে সামরিক আইনের প্রয়োগ করে স্বৈরাচারীভাবে ক্ষমতায় এসেছিল, সেভাবেই শেখ হাসিনা বাকশালী কায়দায় আবারও দেশে স্বৈরাচারী ব্যবস্থার সৃষ্টি করেছেন। তাই এরশাদ ও শেখ হাসিনার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, বিএনপি এখন কোথাও নেই। দেশের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। কিন্তু এরপরও আওয়ামী লীগদের মুখে শুধু খালেদা জিয়া ও বিএনপির নাম। কারণ তাদের মনে এখনও ভয় আছে।

সংলাপ হবে না। দাবি শুধু নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন বলেও জানান তিনি।

দেশের সম্পদ প্রশাসনকে ব্যবহার করে সরকার ‘ক্রসফায়ারের’ নাটক করছে- এমন অভিমত ব্যক্ত করে তিনি আরও বলেন, অপরাধী হলে গ্রেফতার করুন। শাস্তি দিন, প্রয়োজনে ফাঁসি দিন। গ্রেফতারের পর খুন করবেন না। প্রশাসনকে সরকারের ইশারায় না চলারও আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা এই প্রহসনের নির্বাচন দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। নির্বাচনের ব্যর্থতা ঢাকতে প্রধানমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করছেন বলেও মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক।

ব্যারিস্টার খোকন মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি গোলাম রহমান দুর্জয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার রফিকুল হক রাজা, অ্যাডভোকেট মহসিন মিয়া, অ্যাডভোকেট ওলিউর রহমান, ব্যারিস্টার শাকিব মাহবুব রাফি, আনোয়ার বারি পিন্টু, তৌহিদুল ইসলাম, পিয়ার হোসেন কমল, মিজানুর রহমান টিপু, জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু, কুতুবুদ্দিন সানি, দিদার হোসেন প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এমএআর/সা/জানুয়ারি ২৮, ২০১৪)