দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন বুধবার
রাজু হামিদ, দ্য রিপোর্ট : বহুল আলোচিত দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে বুধবার সন্ধ্যায়। যেখানে প্রথমবারের মতো প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসছেন জাতীয় পার্টির সদস্যরা। তবে বিএনপির মতো এ দলটিও তাদের উপনেতা নির্ধারণ করতে পারেনি।
সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়া এ অধিবেশনে দীর্ঘ ২২ বছর পর বিএনপি-জামায়াত জোটের কোনো সদস্য থাকছেন না। সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হওয়ার পর কখনও সরকারি দলে আবার কখনও বিরোধী দলে ছিল বিএনপি। আর ষষ্ঠ সংসদ ছাড়া অন্যান্য সংসদে কম-বেশি প্রতিনিধিত্ব ছিল জামায়াতের। এবার প্রথম বিরোধী দলে এসেছে জাতীয় পার্টি। অবশ্য সরকারেও তাদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। ফলে দশম সংসদের কার্যক্রম হবে কিছুটা নতুন আঙ্গিকে।
তবে অধিবেশনের মেয়াদকাল এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। অধিবেশন শুরুর আগে অনুষ্ঠেয় কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে সেটি নির্ধারণ করা হবে।
এ ছাড়া ইতোমধ্যে আসন বণ্টন চূড়ান্ত হয়েছে। বিরোধী দলের সদস্যদের দেওয়া হয়েছে সামনের সারির পাঁচটি আসন। এ ছাড়া মন্ত্রী হিসেবে দলটির আরেক সদস্য সামনের সারিতে স্থান পাবেন।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার হিসেবে অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। বুধবার সংসদের উদ্বোধনী দিনে তাদের নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।
ইতোমধ্যে সংসদ নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করেছে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দল। আর বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ।
এ ছাড়া সরকারি দলের পক্ষ থেকে চিফ হুইপ হিসেবে আ স ম ফিরোজ ও বিরোধী দলের পক্ষ থেকে তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
এদিকে দীর্ঘদিন পর সংসদের প্রেসিডেন্ট প্লাজা ব্যবহার করে অধিবেশনে যোগ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট। সংবিধান অনুযায়ী উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেবেন তিনি। চলতি সংসদের সদস্য শওকত মোমেন শাজাহান মৃত্যুবরণ করায় শোক প্রস্তাব উত্থাপন ও তা নিয়ে আলোচনার পর কিছু সময়ের বিরতি দেওয়া হবে। এরপর রাষ্ট্রপতির ভাষণের মধ্য দিয়ে অধিবেশন মুলতবি করা হবে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান, চলমান সংসদের কোনো সদস্য মারা গেলে শোক প্রস্তাব উত্থাপনের পর সংসদ মুলতবির রেওয়াজ থাকলেও অধিবেশনের প্রথম দিনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের বাধ্য-বাধকতা থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে স্পিকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর একটি রুলিং-এর কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
চলতি সংসদে পাসের জন্য একটি মাত্র বিল জমা পড়েছে। বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট বিল, ২০১৪ নামের এই বিলটি আগামী সপ্তাহেই সংসদে উত্থাপন করা হবে। আর প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের জবাব দানের জন্য ইতোমধ্যেই পাঁচ শতাধিক প্রশ্ন জমা পড়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ জানুয়ারি নবম সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি এ সংসদের যাত্রা শুরু হয়। আর দশম সংসদে এ পর্যন্ত ২৯৭ জন সদস্য শপথ নিয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৩১ জন (একজন মারা গেছেন), জাতীয় পার্টির ৩৪ জন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ৬ জন, জাসদ (ইনুর) ৫ জন, তরিকত ফেডারেশনের দুজন, জেপি (মঞ্জুর) দুজন এবং বিএনএফের একজন সদস্য রয়েছেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরএইচ/এনডিএস/এমএআর/ এনআই/জানুয়ারি ২৮, ২০১৪)