সাগর আনোয়ার, দ্য রিপোর্ট : প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তবে দলে ন্যূনতম কর্তৃত্ব নেই তার। এমন অবস্থায় মনের দুঃখে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এ দূত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে পাড়ি দিচ্ছেন মধ্যপ্রাচ্যে।

জাতীয় পার্টির একাধিক শীর্ষ নেতা দ্য রিপোর্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ দলের চেয়ারম্যানের স্ত্রী হলেও এখন তিনি সম্পূর্ণ এরশাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ফলে জাতীয় পার্টির সব সিদ্ধান্তই তিনি নিচ্ছেন এরশাদকে সাইড লাইনে রেখে। এমনকি মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারকে ডাকা হচ্ছে না বিরোধী দলের বৈঠকে। আর এরশাদের ছোট ভাই জিএম কাদেরকে উপেক্ষা করছেন শুরু থেকেই। এ সব কারণেই ক্ষোভে অভিমানে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এরশাদ।

সূত্রের দাবি, ক্ষমতায় থাকাকালীন এরশাদ মধ্যাপ্রাচ্যের ওই দেশটির বর্তমান শীর্ষ ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে বন্ধু বানিয়েছিলেন। এরশাদ ও ক্ষমতাধর ওই ব্যক্তির সঙ্গে মধুর সম্পর্ক এখনো বিদ্যমান।

সূত্র মতে, সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন, বিরোধীদলীয় উপনেতা ও চিফ হুইপ নির্বাচন নিয়ে ৯ জানুয়ারি শপথের পর থেকে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন এরশাদ ও রওশন। সর্বশেষ ২৩ জানুয়ারি বনানীর কার্যালয়ে বৈঠক করে সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য ৬ জনের নাম চূড়ান্ত করেন এরশাদ। কিন্তু ৬ জনের মধ্যে একজন ছাড়া বাকিদের এমপি করতে চান না রওশন।

এ ছাড়া মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি দলটির চেয়ারম্যান এরশাদ ও মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারকে। দলের শীর্ষ এ নেতাদের মতামতকে উপক্ষো করেই তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে নির্বাচিত করা হয়েছে বিরোধী দলের চিফ হুইপ। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন এরশাদ।

জাপার একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রওশন সংসদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এখন দলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছেন। এ জন্য জাতীয় পার্টিতে এরশাদের ওপর ক্ষুব্ধ নেতাদের কাছে টানছেন তিনি। যারা দলত্যাগ করেছেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগও করছেন। এমনকি এতোদিন যারা দলে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তাদেরও সক্রিয় করার চেষ্টা করছেন রওশন। এতে দিনে দিনে জাতীয় পার্টিতে এরশাদপন্থিরা কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। অনেকে অপমানে দলও ত্যাগ করছেন।

জাপা নেতাদের দাবি, সর্বশেষ দলে কোণঠাসা হয়ে পড়া প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন ২৭ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে কাজী জাফর আহমদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।

এ সময় আহসান হাবিব লিংকন বলেন, ‘এরশাদ সাহেবের ঘন ঘন মত বদলানোর কারণে অনেক নেতাই ক্ষুব্ধ। তবে আমরা তো আর রওশন এরশাদের নেতৃত্বে পার্টি করতে পারি না। তাই দল পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমি আমরা নির্বাচনী এলাকার অসহায় দুঃস্থ মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করতে এসেছি। তারা যে সিদ্ধান্তই নেবেন আমরা তা স্বাগত জানাব।’

এরশাদের বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।’

(দ্য রিপোর্ট/ সাআ/এনডিএস/জানুয়ারি ২৮, ২০১৪)