‘ঘোষিত মুদ্রানীতি অর্থনৈতিক সূচকগুলোকে ইতিবাচক অবস্থানে নিয়ে যাবে’
দ্যা রিপোর্ট প্রতিবেদক : ঘোষিত মুদ্রানীতিকে সতর্ক ভারসাম্যমূলক মূদ্রানীতি বলে অবিহিত করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। যা দেশের অভ্যন্তরীণ ও বহিঃখাতের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচকগুলোকে ইতিবাচক অবস্থানে নিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
মঙ্গলবার মুদ্রানীতির ওপর এক প্রতিক্রিয়ায় ডিসিসিআই এ মন্তব্য করেছে।
প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা চেম্বার জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি হ্রাসের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ মূদ্রানীতিটিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হারের লক্ষ্যমাত্রা ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথমার্ধের মূদ্রানীতিতে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ যা পুরোপুরি অর্জিত হয়নি।
ঢাকা চেম্বার মনে করে ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ হার ও সমসাময়িক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাই এর অন্যতম প্রধান কারণ। তাই বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধির হারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুদের হারের স্প্রেড কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
অন্যদিকে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হারের লক্ষ্যমাত্রা গত সময়ের ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে মূদ্রানীতিতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের মোট ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ২৬০ বিলিয়ন টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষে সরকার ৪৬ বিলিয়ন টাকা ব্যাংক হতে ঋণ নিয়েছে, ঋণ গ্রহণের পরিমাণ যাতে কোনোমতেই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম না করে সে ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের জোরদার ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।
ঘোষিত মূদ্রানীতিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির হার নিম্নমুখী হওয়া ও অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে রফতানি প্রবৃদ্ধির ধীরগতির সম্ভাবনা দেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটা মোকাবেলায় বংলাদেশ ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে ঢাকা চেম্বার।
এ ছাড়া মূদ্রানীতির একটি অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। এ লক্ষ্যে নতুন মূদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতির হার বিদ্যমান সাড়ে সাত শতাংশের বেশি থেকে হ্রাস করে সাত শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। পরিসংখ্যান থেকে আমরা দেখতে পাই খাদ্য মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ডিসেম্বর ২০১৩ তে ছিল ৯ শতাংশ। তাই সামগ্রিক ভোক্তা মূল্যস্ফীতি হ্রাস করতে হলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হ্রাসের কোনো বিকল্প নেই। মূদ্রানীতিতে কৃষি খাতে ঋণ যোগান পর্যাপ্ততার উপর বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নজর যোগান সহায়ক হবে যা মূল্যস্ফীতির চাপ প্রশমনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করে ঢাকা চেম্বার। তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার কবে নাগাদ নিম্নমুখী প্রবণতায় ফিরে আসবে।
চলতি অর্থবছরের মূদ্রানীতিতে ঋণ ঝুঁকি এড়াতে ও আমানত নির্ভর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ঋণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে অনুপ্রেরণা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের বড় কর্পোরেট হাউজগুলোর তহবিল জোগাড়ের জন্য ব্যাংকগুলোর চেয়ে পুঁজিবাজারে ইক্যুয়িটি ও ডিবেঞ্চার ইস্যুর ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে যা পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে ভূমিকা রাখবে বলে ডিসিসিআই মনে করে। এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে সচেষ্ট ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার।
(দ্য রিপোর্ট/এআই/এসবি/জানুয়ারি ২৯, ২০১৪)