উপজেলা নির্বাচনে সরকারি সম্পদ ব্যবহার দণ্ডনীয়
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : উপজেলা নির্বাচনে সরকারি অফিস, যানবাহন এবং অন্যান্য সম্পত্তি ব্যবহার করা যাবে না। আসন্ন এ নির্বাচন সামনে রেখে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১০ নির্দেশনা দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে মঙ্গলবার এ সব নির্দেশনা সারাদেশে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
১০ নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হলে, শৈথিল্য প্রদর্শন করলে কিংবা অবহেলা করলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশ, আইন ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এ আদেশে বলা হয়েছে।
সরকারের নির্বাহী আদেশে নিদের্শনার মধ্যে রয়েছে- স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কোনো অফিস, যানবাহন এবং অন্যান্য সম্পত্তি কোনো প্রার্থীর নির্বাচনের কাজে কোনোভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। মাশুল পরিশোধ করেও ব্যক্তিগত কাজে কোনো যানবাহন ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া যাবে না।
এ ছাড়া স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের পদমর্যাদা, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি কোনো প্রার্থীর নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করতে পারবে না।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করতে হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সময়ে সময়ে যে আদেশ-নির্দেশ জারি করেছে বা করবে তা প্রতিপালন করতে হবে। নির্বাচনী মিছিল, সভা ও প্রচার যাতে অবাধে ও শান্তিপূর্ণ হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কোনো নির্বাচনী অফিস বা প্রতীক বা পোস্টার নষ্ট করার যেকোনো চেষ্টা রোধে সামাজিক প্রতিরোধ গঠনে সহায়তা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই নির্বাহী আদেশে।
ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ কিংবা সিটি করপোরেশনসমূহে এমন কোনো উন্নয়ন স্কিম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা যাবে না যা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর ভোট প্রাপ্তিতে বা প্রচাণার পক্ষে ব্যবহৃত হতে পারে।
ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ কিংবা সিটি করপোরেশনসমূহ কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অনুদান বা অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে না, যা কোনো প্রার্থীর প্রাপ্তিতে বা প্রচার কাজে প্রভাব বিস্তার করবে।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনো প্রার্থীর নির্বাচনী কাজে বা প্রচারে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। ভোটকেন্দ্র নির্মাণসহ নির্বাচনী সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা প্রয়োজন হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান তা প্রদান করবে।
নির্বাহী আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে চতুর্থ উপজেলা পরিষদের প্রথম পর্যায়ে ১২০টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে ৪৮৭টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সরকার জাতির কাছে সাংবিধানিকভাবে দায়বদ্ধ। অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও ভয়ভীতিহীন পরিবেশে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। নির্বাচন কমিশনের এ দায়িত্ব সুচারুরূপে সম্পাদনের জন্য সরকারি অফিস ও সংস্থাসমূহ সব প্রকার সহযোগিতা করতে আইনগতভাবে বাধ্য। এই নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারি সাহায্য-সহযোগিতার পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অত্যাবশ্যক।
স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রশাসন অধিশাখা থেকে জারি করা এ নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনের সময় দেশের সর্বত্র শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত। নির্বাচনের জন্য শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব মূলত সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও কর্তৃপক্ষের ওপর অর্পিত থাকলেও এ ব্যাপারে স্থানীয় জনসাধারণ এবং নেতৃবৃন্দের সাহায্য ও সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।
শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার এ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে জেলা পরিষদ, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদসমূহের দায়িত্ব বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে নির্বাহী আদেশে।
(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এনডিএস/সা/জানুয়ারি ২৯, ২০১৪)