চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবে ককটেল হামলা, ভাঙচুর ও সাংবাদিকদের অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় এজাহারভুক্ত আসামি যুবলীগ নেতা দাউদ সম্রাট ওরফে প্রকাশ ডাকাত সম্রাটকে (২৬) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সীতাকুণ্ডের পাশের উপজেলা মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া এলাকায় বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। হামলার ঘটনায় জড়িত আরও দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার দাউদ সম্রাট সীতাকুণ্ড সদরের মধ্যম মহাদেবপুর এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে এবং স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে বেশকটি মামলা রয়েছে থানায়।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার রাতে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে সম্রাটকে গ্রেফতার করা হয়। প্রেসক্লাবে হামলার পর থেকে সে পালিয়ে ছিল।

তিনি আরও জানান, হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

প্রসঙ্গত, পৌরসভা নির্বাচনের তিন দিন আগে ২৭ ডিসেম্বর রাতে সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন আওয়ামী লীগপ্রার্থী বদিউল আলম। এর আধাঘণ্টা পর সংবাদ সম্মেলন করতে প্রেসক্লাবে আসেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীপ্রার্থী সাবেক মেয়র নায়েক (অব.) শফিউল আলম। এ খবর পেয়ে শতাধিক যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মী রাত সোয়া ৮টার দিকে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে প্রেসক্লাবে হামলা চালায়। তারা প্রেসক্লাব ঘেরাও করে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ও গুলি চালায়। এতে পাঁচ সাংবাদিক আহত হন।

সন্ত্রাসীরা প্রায় এক ঘণ্টা মেয়রপ্রার্থী ও সাংবাদিকদের জিম্মি করে রাখে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় ইউএনও ঘটনাস্থলে এসে সাংবাদিকদের উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দু’টি অবিস্ফোরিত ককটেল ও একটি রকেট সিগন্যাল প্লেয়ার উদ্ধার করেন।

হামলার ঘটনায় পুলিশ শুরুতে মামলা নিতে চায়নি বলে অভিযোগ করেন সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক এম হেদায়েত। তার অভিযোগ, হামলার ঘটনায় সাংবাদিকরা মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি এবং হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে অস্বীকার করে।

তিনি জানান, সীতাকুণ্ড থানার ওসি দুই দিন পর মামলা নিতে বাধ্য হলেও তিনি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আপস করার জন্য সাংবাদিকদের ওপর চাপ দেন এবং দুই লাখ টাকা দেওয়ার লোভ দেখান। কিন্তু সাংবাদিকরা বাধ্য হয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন। এ বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। এরপর পুলিশ এজাহারভুক্ত এক সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে।

(দ্য রিপোর্ট/জেএস/এমএআর/সা/জানুয়ারি ০৭, ২০১৬)