আবারও হরতাল
জাতির সামনে আবারও হরতাল! সোমবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিরোধী দল ৬০ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে। স্কুল মাদ্রাসার বার্ষিক পরীক্ষার দোহাই দিয়ে সরকারি দলের নেতারা হরতাল প্রত্যাহারের জন্য বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান যেখানে কাজে আসেনি, সেখানে তার দলের মন্ত্রী-নেতাদের আহ্বান কোনো কাজে আসবে এমনটি ভাবা অমূলক ।
গত ৬০ ঘণ্টার হরতালের চিত্র দেশবাসীর দৃশ্যপট থেকে মুছতে না মুছতে আরো একটি হরতাল! এখানে ভিন্ন কিছু ঘটবে দেশবাসী সেটাও আশা করতে পারে না। তবে দেখার বিষয় এবারের হরতাল সরকার কীভাবে মোকাবেলা করে।
নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের কাজ-কর্ম দেখে মনে হওয়াই স্বাভাবিক যে বিরোধী দলকে বাদ দিয়ে সরকার একটি নির্বাচন করেই ছাড়বে। আর সে কারণেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সকল প্রতিকুলতাকে মোকাবেলা করতে হবে সরকারকে। তাই শুধু ৬০ ঘণ্টার একটি নয়, অবরোধ হরতালসহ বিরোধী দলের আরো সব কঠিন কঠিন কর্মসূচি মোকাবেলা করতে হবে তাদের।
গত হরতালসহ বেশ কিছু দিন থেকে প্রশাসনের পাশাপাশি সরকারি দলের জানবাজ নেতাকর্মীদের বিরোধী দলের কর্মসূচি মোকাবেলায় মাঠে দেখা যাচ্ছে। তাতে সংঘাতের কি চরিত্র দাঁড়িয়েছে তা আমরা ইতোপূর্বে বলার চেষ্টা করেছি। আমাদের মতে, এ অবস্থা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সংঘাত আরো ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাই বেশি। আমরা ইতোপূর্বে এও বলেছিলাম যে, গ্রাম পর্যায়ে যেভাবে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে-তার শুরু করা যায়, শেষ করা যায় না।
আশঙ্কা যা-ই থাক আশাবাদী মানুষ হিসেবে আমরা কামনা করবো শেষ পর্যন্ত বিরোধী দল যদি তাদের কর্মসূচি বহালই রাখে, সরকার এবং সরকারি দল শক্তির চেয়ে মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে তাকে মোকাবেলা করবে। যাতে জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা যায়। একটি গণতান্ত্রিক জোট হিসেবে ক্ষমতাসীন দল সমূহের নেতা-নেত্রীরা নিশ্চয় চাইবেন না মানুষের রক্তের দায় তাদের ঘাড়ে বর্তাক।
তবে বিরোধী জোটের যে কোনো দায় নেই তা নয়। তারা অতীতে ক্ষমতায় ছিলো, ভবিষ্যাতে আসতে চায়, ক্ষমতায় থাকার জন্য এক বচন, এক চরিত্র, আর ক্ষমতায় না থাকলে অন্য বচন, অন্য চরিত্র- জনগণ ভালোভাবে দেখে না।
জনগণ শক্তিমানের সহনশীলতাকে শ্রদ্ধা করে, একটি রাজনৈতিক জোট হিসেবে বিরোধী জোটের যে শক্তি আছে তার যথেচ্ছাচার ব্যবহার না করে সহনশীলতার পরিচয় দিলে আপাতত পরাজয় মনে হলেও আখেরে ফলাফল ভালো আসতে পারে। নিশ্চয় গণতান্ত্রিক জোট হিসেবে দাবিদার বিরোধী দল জনগণের ভালোবাসা-সহানুভূতির উপর নির্ভর করে।