চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে বেসরকারি ক্লিনিক সার্জিস্কোপে ভুল চিকিৎসায় মেহেরুন্নেসা রিমা (২৬) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সার্জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক শামীমা সিদ্দিকা রোজীর ফাঁসির দাবি করছে তার পরিবার।

রিমার পরিবারের দাবি, সার্জিস্কোপের সার্জন শামীমা সিদ্দিকা রোজীর ভুল চিকিৎসাতেই মৃত্যু হয়েছে রিমার। তারা এই চিকিৎসককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে চাকরিচ্যুত করা ও একই সঙ্গে তার ফাঁসির দাবিতে বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন। এতে নগরীর বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানও যোগ দিয়েছিল।

রিমার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সন্তানসম্ভবা মেহেরুন্নেসা রিমাকে রবিবার ভোরে নগরীর পাচঁলাইশের বেসরকারি ক্লিনিক সার্জিস্কোপ (ইউনিট-১)-এ ভর্তি করা হলে তিনি একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন। এর পর তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে থাকলে কর্তৃপক্ষ বিকেলে তাকে একই প্রতিষ্ঠানের ইউনিট-২ তে স্থানান্তর করেন। সেখানে তার পুনরায় অস্ত্রোপচার করা হলে ক্রমেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। একপর্যায়ে রাত ৮টার দিকে মেহেরুন্নেসা রিমা মারা যান।

মানববন্ধনে রিমার বাবা খায়রুল বাশার বলেন, ‘আমার সুস্থ সবল মেয়েকে তারা ভুল চিকিৎসা আর অবহেলা করে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার দাবি করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডা. রোজী ৯ জানুয়ারি রাতে আমাকে বলেছিলেন, সব দায়িত্ব তার। তার কথায় আস্থা রেখে একজন ডাক্তার হিসেবে তাকে বিশ্বাস করে আমি অস্ত্রোপচারের ফরমে সই দিয়েছিলাম। টাকার লোভে তিনি সারারাত এখানে-সেখানে ঘুরে ভোরে যেনতেনভাবে আমার মেয়ের অস্ত্রোপচার করেন। এতেই আমার মেয়ে মারা যায়। এ জন্য সার্জিস্কোপ কর্তৃপক্ষও সমান দায়ী।’

তিনি ডা. রোজীকে অবিলম্বে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রত্যাহার করে গ্রেফতারপূর্বক ফাঁসির দাবি জানান। একই সঙ্গে সার্জিস্কোপ হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করে তা বন্ধ করার দাবিও জানান।

নিহত মেহেরুন্নেসা রিমা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছোট ভাই খায়রুল বাশারের মেয়ে এবং অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী আবদুল্লাহ আল মামুনের স্ত্রী।

এর আগে রবিবার রিমার মৃত্যুর পর বিক্ষুব্ধ স্বজনরা সার্জিস্কোপ হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর করে প্রতিষ্ঠানটির রিসিপশন রুমের কম্পিউটার, টেলিফোন সিস্টেম, কাচ এবং চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। পরে পাচঁলাইশ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

(দ্য রিপোর্ট/জেএস/এপি/এম/জানুয়ারি ১৩, ২০১৬)